যে কোনো উদ্যোগের শুরুতে আসে অনেক বাধা-বিপত্তি। এসব গায়ে না মেখে লেগে থাকলে সফল হওয়া যায়। যারা সফল হন, তাদের অনুসরণ করলে আরও নতুন উদ্যোগ শুরু হয়। নানা খাতের সেসব সফল উদ্যোক্তাকে নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজন
সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে চলেছেন ঝিনাইদহের আলতাফ হোসেন আলতু মিয়া। একটুও যেন পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই তার। সবজি চাষ ও এর ব্যবসায় সফল হয়েছেন। এবার লেয়ার মুরগির খামার তৈরির চেষ্টা করছেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করছেন সম্মান শ্রেণির এক ছাত্র।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না গ্রামের আলতু মিয়া জানান, প্রায় দেড় বিঘা জমিতে সবজি চাষ ও উৎপাদিত সবজির ব্যবসার পাশাপাশি চার হাজার লেয়ার জাতের মুরগির বাচ্চা কিনেছেন দেড় মাস আগে। রাজধানীর কাজী অ্যান্ড কাজী ফার্ম থেকে প্রতিটি বাচ্চা ৩৭ টাকা দরে কিনেছিলেন। ২০ সপ্তাহ পর ডিম দেওয়ার উপযোগী হয়ে যাবে। ডিম থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় হবে।
আলতু মিয়া জানান, ২০ সপ্তাহে ডিম দেওয়ার উপযোগী করা পর্যন্ত তার খরচ হবে ২০ লাখ টাকার মতো। পরে ডিম বিক্রি করে ২৮ লাখ টাকা এবং পরিণত মুরগিগুলো বিক্রি করে আরও সাত থেকে আট লাখ টাকার মতো লাভ করতে পারবেন। সবকিছু ঠিকঠাক চললে সব মিলিয়ে খরচ বাদে তার নিট আয় দাঁড়াবে ১৫ লাখ টাকায়।
সম্প্রতি সম্মান পরীক্ষা সম্পন্ন করে এ খামার দেখভাল করছেন আবদুস সবুর। তিনি জানান, খামারের মুরগিগুলোকে শুধু প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি খাবারই খাওয়ানো হচ্ছে। ফলে মানব দেহে ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পড়বে না। মুরগির স্বাস্থ্য ও সুস্থতা নিশ্চিতে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন তিনি।
বাজার সম্প্রসারণ বিষয়ে আলতু মিয়া বলেন, সবজি চাষ ও দেশে-বিদেশে সরবরাহের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ইতোমধ্যে তিনি ডিম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, যেন তার খামার থেকে সরাসরি ডিম বিক্রি করা যায়। এছাড়া ডিম দেওয়া বন্ধ হওয়ার পর মুরগিগুলো বিক্রি করে দেবেন স্থানীয় বাজারে। এতে যথাসম্ভব কম দামে ডিম ও পরিণত মুরগি বিক্রি করে এলাকার মানুষের প্রোটিন চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবেন।
ঝিনাইদহ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, পরিবেশসম্মত সবজি চাষে আলতাফ হোসেন জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি আশা করেন, তার লেয়ার খামার এলাকার মানুষের প্রোটিন চাহিদা পূরণে দৃষ্টান্তমূলক কিছু করতে পারবে।
দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ