শেয়ার বিজ ডেস্ক: মার্কিন কফি চেইন স্টারবাকস চীনের ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার সঙ্গে অংশীদারিত্বের ঘোষণা দিয়েছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এ কোম্পানিটি চীনের বাজারে ব্যাপকভাবে প্রবেশ করছে। স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠতে না পেরে চীনের উদীয়মান খাদ্য সরবরাহর বাজারে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছিল স্টারবাকস। খবর এএফপি।
মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ডেলিভারি অর্ডারের ব্যবস্থা করে চীনের লুকিন কফি সম্প্রতি ব্যাপকভাবে এগিয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠতে পারছে না স্টারবাকস। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার সঙ্গে অংশীদারিত্বের ঘোষণা দিয়েছে।
স্টারবাকস প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও প্রেসিডেন্ট কেভিন জনসন সাংহাইয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি এ অংশীদারিত্বে চীনের বাজারে কফি ব্যবসায় পরিবর্তন আসবে।’ ডিজিটাল এ উদ্যোগ মার্কিন প্রতিষ্ঠানটির জন্য জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চুক্তির আওতায় আলিবাবার খাদ্য ডেলিভারি ইউনিটে স্টারবাকসের কফি বিক্রি হবে। ঐতিহ্যগতভাবে চীন চা-প্রিয় জাতি। যুক্তরাষ্ট্রের পরে দেশটিকেই লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছে স্টারবাকস। ইতোমধ্যে ১৪০টি দেশে তিন হাজার ৪০০ ক্যাফে রয়েছে স্টারবাকসের। এছাড়া প্রতি ১৫ ঘণ্টায় গড়ে একটি করে আউটলেট চালু হচ্ছে।
চীনে রেস্টুরেন্টগুলোতে অনলাইনে ক্রয়াদেশ বিক্রি বেড়েছে। প্রতিনিয়ত অনলাইননির্ভর রেস্টুরেন্ট বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় কৌশল পাল্টাচ্ছে স্টারবাকস। যদিও এখন পর্যন্ত বিস্তারিত ঘোষণা আসেনি প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে।
বেইজিংভিত্তিক লুকিন গত বছর থেকে তাদের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে চলেছে। চলতি বছর শেষে দুই হাজারের বেশি আউটলেট করার লক্ষ্য নিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। মনে করা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির এ বিস্তৃতির পরেই স্টারবাকস নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। তবে লুকিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতার কারণেই যে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, জনসন তা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, বিশ্ব খুচরা বাজারে বিবর্তনের কারণে আলিবাবার সঙ্গে অংশীদারিত্বের এ উদ্যোগ। স্টারবাকস সবসময়ই প্রতিযোগিতা মোকাবিলা করছে।
চীনের অনলাইন ব্যবসার অনেকটাই আলিবাবার নিয়ন্ত্রণে। প্রতিষ্ঠানটির তাওবাও প্ল্যাটফর্ম ভোক্তা ও ভোক্তা বাজারের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া টিমল প্ল্যাটফর্ম ব্যবসায়ী ও ভোক্তা বাজারের প্রায় অর্ধেকটা নিয়ন্ত্রণ করে।
আলিবাবা আগামী ২০ বছরের মধ্যে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। জ্যাক মা সম্প্রতি এমন পূর্বাভাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যদি আলিবাবা দুই বিলিয়ন ক্রেতাকে সেবা দিতে পারে, তা হবে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার সমান। যদি ১০০ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে, তা সরকারের সৃষ্ট কর্মসংস্থানের চেয়ে বেশি হবে। এছাড়া যদি কোম্পানির প্ল্যাটফর্মে ১০ মিলিয়ন লাভজনক ব্যবসা পরিচালন করা যায়, সব মিলিয়ে তাকে অর্থনীতি বলা যায়।’
জ্যাক মার তথ্যমতে, অস্ট্রিয়া, ইরান, নরওয়ে, পোল্যান্ড ও সুইডেনসহ বেশ কিছু দেশের তুলনায় ইতোমধ্যে আলিবাবার অর্থনীতি বড়। ২০২০ অর্থবছরে পণ্যদ্রব্যের মূল্য এক ট্রিলিয়ন ডলার করার লক্ষ্য নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া ২০৩৬ সালের মধ্যে ক্রেতার সংখ্যা দুই বিলিয়নে আনারও লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 11:24 pm
আলিবাবার সঙ্গে অংশীদারিত্ব করছে স্টারবাকস
আন্তর্জাতিক ♦ প্রকাশ: