আলুর চিপস বানিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের কয়েকশ পরিবার। প্রায় ৪০ বছর ধরে তারা চিপস তৈরি করছে। কাজের ফাঁকে আলুর চিপস তৈরি করে সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা আনতে ভ‚মিকা রাখছেন নারীরাও।
মাঘ থেকে শুরু করে চৈত্রÑএ তিন মাস চিপস তৈরিতে ব্যস্ত থাকে এসব পরিবারের লোকজন। নারীরা সংসারের কাজের ফাঁকে এ ব্যবসা করে সংসারের অভাব দূর করছেন।
সরেজমিনে শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামে গিয়ে কয়েকশ পরিবারের নারী-পুরুষকে আলুর চিপস তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে। কেউ আলু সিদ্ধ করছেন, কেউ আলু কাটছেন, আবার কেউ কাটা আলুর পাপরগুলো রোদে শুকানোর জন্য বস্তার ওপর বিছিয়ে দিচ্ছেন।
কথা বলে জানা যায়, এক মণ
চিপস তৈরি করতে পাঁচ মণ আলুর প্রয়োজন। আলুর দাম ও আনুষঙ্গিক খরচসহ এক মণ চিপস বানাতে প্রায় দুই হাজার টাকা খরচ হয়, যা বিক্রি হয় চার হাজার টাকায়। এজন্য সময় লাগে দুদিনের মতো।
স্থানীয়রা জানান, এ এলাকার চিপসের জনপ্রিয়তা আছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। চিপস তৈরিতে পরিশ্রম হলেও বাজার ভালো থাকায় লোকসানের মুখ দেখেননি কেউ আজ পর্যন্ত। অন্যদিকে যাদের পুঁজি বেশি, তারা বেশি করে আলু কিনে চিপস সংরক্ষণ করেন।
শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের চিপস ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, এক মণ চিপস বিক্রি করে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার মতো লাভ হয়। গ্রামের আমেনা খাতুন বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ। বেশি টেকা না থাকায় হামরা বেশি করি আলু কিনতে পারি না। সরকার যদি কিস্তিতে ঋণ দেয়, তাহলে ভালোই হতো।’
আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেন, শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের অধিকাংশ নারী সংসারের কাজের ফাঁকে আলুর চিপস তৈরি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা চিপস তৈরির জন্য কৃষকের কাছ থেকে বড় আলু বাজারদরের চেয়ে বেশি দামে কিনে থাকেন। এতে কৃষকরাও আলুর ন্যায্যদাম পাচ্ছেন। কেউ আলুর চিপস তৈরির ব্যবসার জন্য ঋণ নিতে চাইলে কৃষি অফিস থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলে জানানো হয়।
মো. শামীম কাদির