প্রতিনিধি, জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের পাঁচটি উপজেলায় এবার ৩৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু রোপণ করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে। দাম বেশি পেয়ে কৃষকরা আলু তুলতে শুরুও করেছেন। ফলন গত মৌসুমের চেয়ে বেশি।
তবে দাম নিয়ে প্রশ্ন তাদের। এক সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে জাতভেদে আলু বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে।
গত বৃহস্পতিবার সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজিদরে। হঠাৎ করে দাম কমে যাওয়ায় আগাম জাতের আলু চাষিরা পড়েছে বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকরা।
আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ জেলা হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাট। গত বছরের তুলনায় এবার ২২৫ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ বেশি হয়েছে। বিভিন্ন মাঠে ক্যারেজ, রোমানা, স্ট্রিক, গেনোলা, মিউজিকা, ফ্রেশ, ফাটা পাকরি, বটপারকরি, রোমানা, ১২-১৩, সাদা সেভেনসহ হরেক জাতের আলু রোপণ হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে জাতভেদে প্রতি মণ আলু (৪০ কেজি) ২ হাজার থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। সেই আলু আজ বৃস্পতিবার বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে। ফলে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলু ২৫-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে প্রতি মণ আলুর দাম কমে নেমেছে প্রায় অর্ধেকে। ফলন বাড়লেও দাম কমে যাওয়ায় হতাশায় চাষিরা।
বৃহস্পতিবার সকালে কালাই পৌরশহরের বালাইট মোড়ে জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কের পাশে জমি থেকেই আলু বিক্রি করছিলেন হযরত আলী নামে এক কৃষক। তিনি বলেন, ১০ শতক জমিতে সাদা সেভেন জাতের আগাম আলু রোপণ করেছিলাম। খরচ হয়েছে ১১ হাজার টাকা। আলু হয়েছে ১৫ মণ। বিক্রি করেছি ১ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। লাভ হয়েছে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। এই আলু দু’দিন আগে বিক্রি করলে লাভ টিকত ১৯ হাজার টাকা। আরেক কৃষক রমজান আলী বলেন, বর্তমানে বাজারে জাতভেদে প্রতি মণ আলু ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গত দু’দিন আগেও এসব আলু ২ হাজার থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা মণ ছিল।
আলু ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে মোকামে চাহিদার তুলনায় বাজারে আগাম জাতের আলুর জোগান বেশি। তাই দাম কম। জোগান কমলেই দাম আবার বাড়বে। কাঁচা বাজারের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। তবে বর্তমান বাজারদর থাকবে না। দিন দিন আগাম জাতের আলুর পরিমাণ কমে আসছে।’
কালাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় জানান, দিন যতই বাড়তে থাকবে আলুর দাম কিছুটা নিম্নমুখী হবে। এতে চাষিদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর ফলন ভালো হয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে আলু চাষ হয়েছে।