রংপুরে আলুর মড়ক রোগ প্রতিরোধী জাত ক্যারোলাস ও অ্যালুয়েট উদ্ভাবন করা হয়েছে। গবেষণাকারী বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আলুর মড়ক রোগ বা লেটব্লাইট রোগের কারণে ফলন ৩০ শতাংশ কমে যায়। রোগ দমনে ছত্রাকনাশক কেনায় প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। তাই মড়ক রোগ প্রতিরোধী জাত ক্যারোলাস ও অ্যালুয়েট কৃষক পর্যায়ে ব্যবহার করতে পারলে অনেক অর্থ বেঁচে যাবে। পরিবেশ দূষণ রোধের পাশাপাশি আলুর উৎপাদন খরচ কমে যাওয়ায় কৃষক লাভবান হবেন। আলুর দুটি জাত নিয়ে তিন বছর গবেষণা করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। উদ্ভাবিত আলু দুটি খেতে সুস্বাদু ও গড় ফলন হেক্টরপ্রতি প্রায় ৩৫ টন।
আলু বাংলাদেশে প্রধানত সবজি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের প্রায় ৪০টি উন্নত দেশের প্রধান খাদ্য আলু। ধান ও গমের পর আলুর অবস্থান। এদেশে প্রায় চার লাখ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। প্রায় ৬০ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়। আলুর একরপ্রতি গড় ফলন ছয় মেট্রিক টন, যা অন্য আলু উৎপাদনকারী দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। রোগমুক্ত বীজ, ভালো জাত ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতিতে আবাদ করলে সহজে প্রতি একরে ১২ টন উৎপাদন সম্ভব। বাংলাদেশে বছরে মাথাপিছু খাদ্য হিসেবে আলু খাওয়ার পরিমাণ ২৫ কেজি। প্রতিদিন মাত্র সাড়ে ৬৮ গ্রাম। আলু পুষ্টির দিক দিয়ে ভাত ও গমের মতো। বরং আলুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ থাকে, যা ভাতে নেই। তাছাড়া খাদ্য হিসেবে আলু সহজে হজম হয়।
ক্যারোলাস ও অ্যালুয়েট জাত দুটি দেশের কৃষকের মাঝে কীভাবে দ্রুত পৌঁছানো যায়, সে বিষয়ে বিজ্ঞানী ও সরকারের কৃষি বিভাগের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
হুমায়ুন কবীর মানিক, রংপুর