শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে আসা কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে ঋষি সুনাক সরকারের নেয়া বিতর্কিত পদক্ষেপ ‘রুয়ান্ডা পরিকল্পনা’ বাতিল ঘোষণা করলেন দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। খবর: দ্য গার্ডিয়ান।
যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি করা জয় নিয়ে সরকার গঠনের পর গত শনিবার প্রথম কার্যদিবসে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন লেবার পার্টির নেতা স্টারমার। ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচনে ‘পরিবর্তনের নেতা’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বলেন, রুয়ান্ডা পরিকল্পনা এরই মধ্যে ‘মৃত ও সমাহিত’। এই অকেজো পদক্ষেপটি শিগগির বাতিল করা হবে।
নির্বাচনের ভরাডুবির মধ্য দিয়ে বিদায় নেয়া কনজারভেটিভ দলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ২০২২ সালে ‘রুয়ান্ডা পরিকল্পনা’ গ্রহণের কথা জানান। তখনই এটি বাতিলের পক্ষে জোরালো আন্দোলন শুরু হয়। দেশটির আদালতও রুয়ান্ডা পরিকল্পনা বারবার স্থগিত করে রায় দেন। ফলে তা আর বাস্তবায়ন করতে পারেননি সুনাক।
বৃহস্পতিবার হয়ে যাওয়া ভোটের আগে নির্বাচনী ইশতেহারেও কনজারভেটিভ পার্টি ফের ক্ষমতায় গেলে রুয়ান্ডা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রæতি দেয়। তবে লেবার পার্টির ইশতেহারে বলা হয়, তারা সরকার গঠন করলে এটি বাতিল করে নতুন ব্যবস্থা দাঁড় করাবে। নির্বাচনী প্রচারেও ‘রুয়ান্ডা পরিকল্পনা’ একটি ইস্যু হয়ে ওঠে। বিশেষ করে অভিবাসী ভোটাররা সুনাকের এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে, যার প্রভাব ভোটের ফলেও দেখা গেছে।
এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টি মাত্র ১২১টি আসন পেয়েছে, যা দুই শতাব্দীর ইতিহাসে পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষ হাউস অব কমন্সে দলটির পাওয়া সর্বনি¤œ আসন।
লেবার নেতা স্টারমারসহ তার দলের প্রার্থীরা রুয়ান্ডা পরিকল্পনা বাতিলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ভোটের প্রচার চালান। ব্যালটে তারা এর সুফলও পেয়েছেন। ১৯৯৭ সালের পর এবারের নির্বাচনে রেকর্ড ৪১২টি আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করেছে লেবার পার্টি।
লেবার নেতা স্টারমার শুক্রবারই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং মন্ত্রিসভাও গঠন করেন। সে অনুযায়ী শনিবার ছিল তার আনুষ্ঠানিক প্রথম কার্যদিবস। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, রুয়ান্ডা পরিকল্পনা শিগগির বাতিল করা হবে। কারণ এ পরিকল্পনায় মাত্র এক শতাংশ কাগজপত্রহীন আশ্রয়প্রার্থীদের বিতাড়নের কথা রয়েছে। এটি আশ্রয়প্রার্থীদের ঠেকাতে কোনো কাজে আসবে না।
গত নভেম্বরে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট রুয়ান্ডা পরিকল্পনাকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে বলেন, ‘তৃতীয় বিশ্বের দেশ রুয়ান্ডাকে নিরাপদ মনে করার কোনো কারণ নেই।’