আশকোনায় দুই জঙ্গি নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের অভিযানে রাজধানীর আশকোনার একটি বাসায় সন্দেহভাজন দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন জঙ্গিনেতা তানভীর কাদেরীর ছেলে বলে দাবি করেছে পুলিশ। পাশাপাশি নারীসহ চারজন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বলেও জানা গেছে। গতকাল দক্ষিণখান থানার পূর্ব আশকোনায় হজ ক্যাম্পের পাশের একটি বাসায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় পুুলিশ।

জানা গেছে, বাসাটিতে একজন নারী গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটালে তার সঙ্গে আরও এক শিশু আহত হয়। আহত শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। আর আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে নিহত আরেক জঙ্গি নেতা জাহিদুল ইসলামের স্ত্রীও রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

দিনভর অভিযান শেষে বিকাল ৪টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশপ্রধান একেএম শহীদুল হক ঘটনাস্থলে এসে অভিযান সমাপ্তির কথা জানিয়েছেন। এর আগে ‘সূর্যভিলা’ নামের তিনতলা বাড়িটিতে ভোররাতে অভিযান শুরু করে পুলিশ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সেখানে অনেক গ্রেনেড ও বিস্ফোরক পড়ে আছে। তাজা বোমাও রয়েছে। আমাদের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী ইউনিটগুলো এখন কাজ করছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গ্রেনেড ও বিস্ফোরক থাকায় বাসাটিতে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

পুলিশের তথ্যমতে, এক প্রবাসী মালিকানাধীন আশকোনার বাড়িটি মধ্যরাতে ঘিরে ফেলে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। পরে র‌্যাবসহ অন্যান্য শাখাও অভিযানে যুক্ত হয়। বাড়ির নিচতলায় জঙ্গিদের আস্তানা ছিল বলে সন্দেহের কথা জানায় পুলিশ। অভিযানের আগে বের করে আনা হয় সব ভাড়াটিয়াকে।

পুলিশের পক্ষ থেকে সকালে জঙ্গিদের বার বার আত্মমর্পণের আহ্বান জানানো হয় হ্যান্ডমাইকে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জঙ্গিনেতা জাহিদের স্ত্রী-মেয়েসহ চারজন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাদের আত্মসমর্পণের পর ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের জানান, ভেতরে জঙ্গিনেতা কাদেরীর ছেলেসহ আরও তিনজন রয়েছেন।

দুপুর ১টার দিকে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। সে সময় ঘর থেকে এক নারী বেরিয়ে এসে তার দেহের সঙ্গে বাঁধা গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান বলে জানায় পুলিশ। তার দেহ সেখানই পড়ে থাকে। বিস্ফোরণে ওই নারীসহ আরও এক শিশু আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। ওই বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ পর ভেতর থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পরে কাদেরীর ছেলেও নিজের বিস্ফোরণে নিহত হয়।

নিহতদের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, ওই বাড়িতে ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণে’ নিহত দুজনের একজন হলো জঙ্গিনেতা তানভীর কাদেরীর ছেলে। যার বয়স ১৪ বছর। তাকে এলাকাবাসী শহীদ কাদেরী নামে চিনতো। নিহত অন্যজন জঙ্গিনেতা সুমনের স্ত্রী বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা চার-পাঁচ বছরের শিশুটি জঙ্গি ইকবালের মেয়ে। তার মায়ের নাম শাকিরা। স্পিøন্টারে জখম শিশুটি এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তার আগে সকালে যে চারজন আত্মসমর্পণ করেন, তারা হলেন সাবেক মেজর জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী জেবুন্নাহার শীলা ও তার মেয়ে এবং জঙ্গিনেতা মুসার স্ত্রী তৃষ্ণা ও তার মেয়ে।

গত সেপ্টেম্বরে আজিমপুরের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে তানভীর কাদেরী আত্মত্যা করেছেন বলে জানায় পুলিশ। গোয়েন্দাদের দাবি, তামিম চৌধুরী নিহত হওয়ার পর নব্য জেএমবির সমন্বয়কের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছিলেন কাদেরী। ‘আবদুল করিম’ ও ‘শমসেদ’ নামে সংগঠনে পরিচিত ছিলেন তিনি। করিম নাম ব্যবহার করেই তিনি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গুলশান হামলাকারীদের জন্য ফ্ল্যাট ভাড়া করেছিলেন।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০