আশা আর শঙ্কা নিয়ে দুইমাস পর সচল হচ্ছে পুঁজিবাজার

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: মরণঘাতি করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে পড়ে দুই মাসেরও বেশি সময় (৬৬ দিন) পর ফের সচল হচ্ছে দেশের পুঁজবাজার। ইতিমধ্যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষই লেনদেনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন। তবে দীর্ঘদিন পর লেনদেন চালু নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশা ও শঙ্কা সমানভাবে বিরাজ করছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনাপত্তি দেয়ার পর বৃহস্পতিবার (২৮ মে) দুই স্টক এক্সচেঞ্জই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যদিও সরকারের সাধারণ ছুটি আর না বাড়ানোর কারনে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ৩১ মে লেনদেন চালু হওয়ার কথা ছিল।

এদিকে করোনা চলাকালীন সময়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না নেয়া পর্যন্ত লেনদেন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চলবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলার অংশ হিসেবে সরকারের সাধারণ ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে পুঁজিবাজারের ছুটি, যা শুরু হয় গত ২৬ মার্চ। তবে চলমান মহামারিতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজার চালু রয়েছে।

করোনাভাইরাসের কারনে সরকার সর্বপ্রথম গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এরপরে প্রথম দফায় ৭দিন সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। পরবর্তীতে কয়েক দফা ছুটি বাড়ানো হয়, যা আজ শেষ হচ্ছে।

অন্যদিকে লেনদেন চালু নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অধিকাংশ বিনিয়োগকারী লেনদেন চালুর পক্ষে থাকলেও অনেকে এখনই লেনদেন চালু যুক্তিযুক্ত মনে করছেন না। তাদের মতে, এখন লেনদেন চালু হলে দুই ধরনের ঝুঁকি থাকবে। প্রথমত, স্বাস্থ্য ঝুঁকি। দ্বিতীয়ত, আর্থিক বা লোকসানের ঝুঁকি।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন করোনা আক্রন্তের ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যে হাউজে এসে লেনদেন করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে এই সময় অনেকেই শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিতে চাইবে। এতে শেয়ার বাজার পতনেরর শঙ্কা তৈরি হবে।’

জানা গেছে, লেনদেন চালু উপলক্ষে মতিঝিলের ডিএসই বিল্ডিং, ডিএসই এনেক্স বিল্ডিং, মধুমিতা বিল্ডিংসহ অন্যান্য সব হাউজে স্বাস্থ্যবিধি জোরদার করা হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবাইকে হাউজে প্রবেশ করতে হবে। সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও বিনিযোকারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার, থার্মাল স্ক্যানার, মাস্ক ব্যবহার করার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন পরে লেনদেন চালু হচ্ছে এটা ভালো খবর। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লেনদেন করলে আশা করছি সবাই ভালো থাকবেন। বাজার বন্ধ থাকাতে বিনিয়োগকারীরা এমনিতেই আর্থিকভাবে ভালো নেই। লেনদেন চালু হলে তাদের এই আর্থিক সংকট কিছুটা হলেও কাটবে।

একই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর অন্য একজন কর্মকর্তা বলেন, এখন লেনদেন চালু সঠিক হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় কথা এতে করোনা ঝুঁকি বাড়বে। কারণ বিনিয়োগকারীরা যারা আসবেন সবাই গণপরিবহন ব্যবহার করবেন। ফলে করোনা ঝুঁকি থেকেই যাবে।

এদিকে লেনদেন চালু হওয়ার খবরে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঢাকায় ফিরে এসেছেন অধিকাংশ ব্রোকারেজ হাউজ কর্মচারি-কর্মকর্তারা। তারাও স্বাস্থ্য ঝুঁকির নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানা যায়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০