নানা কর্মসূচির মাধ্যমে গতকাল শনিবার আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস পালিত হয়। একাত্তরের ১১ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ। এরপর থেকে প্রতি বছর দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবারও নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে আশুগঞ্জ মুক্ত দিবস।
গতকাল সকালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আশুগঞ্জ উপজেলা কাউন্সিলের উদ্যোগে আশুগঞ্জ গোলচত্বরে মুক্তিযোদ্ধের সম্মুখসমর স্মৃতিস্তম্ভে পতাকা উত্তোলন ও পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি। আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরবিন্দ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, আশুগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মনির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হেবজুল বারি, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জসিম প্রমুখ
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে স্বাধীনতাকামী মুক্তিবাহিনী ওরমিত্র বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর ব্যাপক যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর তিন শতাধিক সদস্য শহীদ হন। অপরদিকে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীরও শতাধিক সদস্য মারা যায়। ১০ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী ও বেঙ্গল রেজিমেন্ট সাড়া রাতব্যাপী প্রস্তুতি নিয়ে ভোর বেলায় আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রেস্ট্র হাউসে অবস্থান নিয়ে তুমুল যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।
যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী পর্যুদস্ত হয়ে রাতে আশুগঞ্জ থেকে পার্শ্ববর্তী ভৈরবে পালিয়ে যায়। তারা আশুগঞ্জ থেকে পালিয়ে ভৈরব যাওয়ার সময় মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত রেল সেতুর একাংশ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। এতে সেতুর দুটি স্প্যান ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। পরে ১১ ডিসেম্বর সকালে এক রকম বিনা বাধায় আশুগঞ্জ বাজার এলাকা দখল করে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা আশুগঞ্জ বাজার এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। এতেই হানাদার মুক্ত হয় আশুগঞ্জ।