আশুলিয়ায় শ্রমিকদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নারী শ্রমিক নিহত

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ঢাকার আশুলিয়ায় শ্রমিকদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে রোকেয়া বেগম নামে এক নারী পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩ জন শ্রমিক। আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রোকেয়া বেগম আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার ম্যাসকট গার্মেন্টস লি.-এ সহকারী সেলাই মেশিন অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন।
তার মৃত্যুর বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন।

পুলিশ, শিল্প সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, চলমান শ্রমিক অসন্তোষের জেরে গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩(১) ধারায় বন্ধ ছিল জিরাবো এলাকায় অবস্থিত ম্যাসকট গার্মেন্টস লিমিটেড নামক তৈরি পোশাক কারখানাটি।

আজ সকালে কারখানাটির শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে কারখানাটির সামনে গিয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকরা পার্শ্ববর্তী রেডিয়েন্স ও সাউদার্ন নামে দুটি পোশাক কারখানায় হামলা চালিয়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে রেডিয়েন্স ও সাউদার্নের শ্রমিকদের সঙ্গে ম্যাসকট গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় শ্রমিকদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

এ সময় শ্রমিকদের ছোড়া ইট-পাটকেলে রোকেয়া বেগমসহ অন্তত পাঁচ শ্রমিক গুরুতর আহন হন।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় রোকেয়াকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকে বলেন, সকাল পৌনে ১০ টার দিকে ম্যাসকট ও রেডিয়েন্স দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। মরদেহ জিরাবোর পিএমকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তবে কোথাও কোনো সড়ক অবরোধ নেই।

এ বিষয়ে জানতে ম্যাসকট গার্মেন্টস লিমিটেডের পরিচালক রাশিদুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ঢাকার সাভার-আশুলিয়া ও গাজীপুরের শিল্প এলাকায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে অস্থিরতা চলছে। তবে দুই সপ্তাহের বেশি সময় পর চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন থেকে ক্রমশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছিল আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই দিন শনি ও রোববার স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ধরে রাখার পর গতকাল সোমবার শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছিল।

বিজিএমইএ সূত্র জানায়, আজ বেলা ১২টা পর্যন্ত তাদের হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, আশুলিয়ায় আজ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩(১) ধারায়, অর্থাৎ ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’র ভিত্তিতে পার্ল গার্মেন্টস, সুসুকা নীট, ম্যাসকটসহ ১৫টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।।

কারখানা খোলা রাখার পর কাজ বন্ধ আছে কিংবা শ্রমিকরা চলে গেছে, এমন কারখানার সংখ্যা ৪টি। এগুলো হলো: রেডিয়েন্স নীটওয়্যার লিমিটেড, সাউদার্ন গার্মেন্টস লিমিটেড, কমফিট কম্পজিট লিমিটেড এবং এস-২১ অ্যাপারেলস লিমিটেড।

এর মধ্যেই আজ দুই পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহতের এ ঘটনা ঘটল।

অন্যদিকে, আজ গাজীপুরেও বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। টঙ্গী, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা, চক্রবর্তী, গাজীপুর সদরের শিরিরচালা এলাকার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। এতে মহাসড়কের বেক্সিমকো থেকে জিরানি পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০