নিজস্ব প্রতিবেদক: আড়াই দিন পর আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসে শুল্কায়ন কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিএন্ডএফ এজেন্টরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলে শুল্কায়ন কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান (এনবিআর) আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে ১৫ দিনের জন্য আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়। কাস্টম হাউস কর্মকর্তা ও সিএন্ডএফ নেতারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সমস্যা সমাধানে সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা কাস্টমস সদস্য ও চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করার কথা ছিল। পরে চেয়ারম্যান বিষয়টি তদারকির জন্য কমিশনার সিএন্ডএফ এজেন্ট নেতাদের সাথে বসার নির্দেশ দেয়। কমিশনার সম্মেলন কক্ষে তাদের সাথে সভা করে। এ সময় চেয়ারম্যান মোবাইলে সমস্যা সমাধানে কিছু সময় চান। কারণ কাস্টমস গোয়েন্দার মহাপরিচালক অসুস্থ। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান। পরে সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা সমস্যা সমাধানে ১৫ দিনের সময় দিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেয়।
এর আগে কাস্টম হাউস কর্মকর্তা ও কাস্টমস গোয়েন্দার হয়রানির অভিযোগ তুলে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তবে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা না করা হয়নি।
আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা জানান, ছোট বন্দর হওয়ায় এখানে মূলত বাণিজ্যিক আমদানিকাররা পণ্য আমদানি করেন। ফলে প্রতিটি বিল অব এন্ট্রিতে শতভাগ শুল্কায়নের মাধ্যমে পণ্য খালাস হয়। আইসিডি কাস্টম হাউসে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫০-৬০টি বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়। এর মধ্যে কাস্টম হাউস ও কাস্টমস গোয়েন্দা প্রতিদিন ২০-২৫টি লক করে দেয়। কিছু বিল অব এন্ট্রিতে অনিয়ম হয়। কিন্তু বেশিরভাগ বিল অব এন্ট্রিতে সামান্য অনিয়ম পেলেই লক করে দেওয়া হয়। আর স্বাভাবিকভাবে শুল্কায়ন হলে একটি পণ্য শুল্কায়ন শেষে খালাস হতে ৩-৪ দিন লাগে। তবে বিল অব এন্ট্রি লক করা বা কোন অভিযোগ উঠলে সে পণ্য খালাস নিতে সপ্তাহ পার হয়ে যায়। এতে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়া করোনার কারণে আমদানি অনেক কমে গেছে। পণ্য আগের চেয়ে অনেক কম আমদানি হচ্ছে। এতে কমে গেছে রাজস্ব আহরণ। তারা আরও জানান, একটি পণ্য কাস্টম হাউস শুল্কায়ন শেষে খালাসের অনুমতি দিলে অনেক সময় কাস্টমস গোয়েন্দা লক করে দেয়। আবার তথ্য থাকলে কাস্টমস গোয়েন্দা বিল অব এন্ট্রি দাখিলের আগেই লক করে রাখে। সামান্য অনিয়ম পেলেই দুই থেকে তিন শতাধিক পর্যন্ত জরিমানা করা হয়। বিলম্বে পণ্য খালাসে আমদানিকারকদের অতিরিক্ত চার্জ গুণতে হয়। অনেক সময় সিএন্ডএফ এজেন্টদের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়। এতে পণ্য খালাসে যেমন সময় লাগে, তেমনি রাজস্ব আহরণ কম হয়। কাস্টম হাউস ও কাস্টমস গোয়েন্দা হয়রানি থেকে বন্ধ করতে সিএন্ডএফ এজেন্টরা সম্প্রতি এনবিআরের দ্বারস্থ হলেও কোন সুরাহা হয়নি। ফলে তারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে কাজ বন্ধ করে দেয়।