আসছে মোখা রূপ নিতে পারে সুপার সাইক্লোনে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় মোখা নিন্মচাপ আকারে থাকলেও ১৩ মে সন্ধ্যা থেকে ১৪ মে ভোরে ঘূর্ণিঝড় আকারে আঘাত হানতে পারে। কক্সবাজার এবং সেন্টমার্টিনের নিন্ম এলাকায় আঘাত হানবে প্রথমে। এরপর চট্টগ্রাম এলাকায় আঘাত করবে। তবে এর গতি পরিবর্তন হতে পারে যেকোনো সময়। তাই উপকূলীয় জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোর ডিসিদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। গতকাল বুধবার বিকালে সচিবালয়ে এ-সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কদিন আগে তৈরি হওয়া নিন্মচাপ আগামীকাল (আজ) থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় মোখা আগামী ১৩ থেকে ১৪ মের মধ্যে দেশের কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আগের মতো সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রাথমিকভাবে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের জন্য ২০ লাখ টাকা, ১৪ টন শুকনো খাবার এবং ২০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে পাহাড় ধস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই পাহাড় ঘেঁষে থাকা রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়া হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে এবং এটি দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে অগ্রসর হবে।’ তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি ১৩ মে রাত থেকে ১৪ মে সকালের দিকে দেশের কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এখন এটি বাংলাদেশ থেকে ১৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। ১২ মে উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নেবে। কক্সবাজার ও মিয়ানমারের ওপর দিয়ে আঘাত হানতে পারে। এটির গতি হবে ১৮০ থেকে ২২০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে। পূর্বাভাস অনুযায়ী সমুদ্রে এখন ১ নম্বর সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। এটির মুভমেন্ট অনুযায়ী সতর্কবার্তাও বাড়তে থাকবে। ৯১ এর প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের ছায়া দেখা যাচ্ছে মোখায়।’

ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি তুলে ধরে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছি। কক্সবাজারের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। যেহেতু রোহিঙ্গারা টেকনাফে অবস্থান করছে সেহেতু তাদের বিষয়টাও দেখতে হচ্ছে। আগাম সতর্কবাতা প্রচারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্ট কার্ড।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সব মাছ ধরার নৌকা উপকূলে নিয়ে আসার জন্য বলেছি। সেভাবে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আম্পান, সিতরাংয়ের মতো ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করেছি। মৃত্যু জিরোতে নিয়ে এসেছি। সত্তর সালে যেখানে ২ লাখ লোক মারা গেছে; এখন সেখানে শূন্য। এবারও মানুষের জানমাল রক্ষা করতে পারব।’

তিনি আরও জানান, এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। এখন পর্যন্ত পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানবে কক্সবাজার এবং এর আশপাশের এলাকায়। বর্তমান পর্যন্ত ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেয়া আছে। সতর্ক সংকেত ৩ হলে উপকূলীয় লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হবে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০