Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 4:06 am

আস্থার প্রতীক এসএ গ্রুপের পণ্য

দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এসএ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। গ্রুপটির সঙ্গে আবদুল জলিল সওদাগরের নাম জড়িয়ে রয়েছে। তিনি চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের নামকরা ব্যবসায়ী ছিলেন। তার দেখাদেখি ব্যবসায় আসেন ছেলে আলহাজ সামশুল আলম। তিনি পাকিস্তানের করাচি থেকে কাপড় এনে ঢাকার ইসলামপুরে বিক্রি করতেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে কাপড়ের ব্যবসা করতেন তিনি। স্বাধীনতার পর কাপড় ব্যবসার সঙ্গে সুতার ব্যবসাও শুরু করেন আলহাজ সামশুল আলম। এরপর ট্রেডিংয়ে নামেন তিনি। মূলত তার হাতেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় এসএ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ।

এভাবে চলতে চলতে খাদ্যদ্রব্য আমদানি, বাল্ব উৎপাদনসহ নানা খাতে তাদের ব্যবসা ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ সময়কালে তারা গড়ে তোলেন শাহ আমানত এডিবল অয়েল ফ্যাক্টরি। সে সময়ে জার্মানি থেকে আধুনিক মেশিন আমদানি করে তেলের কারখানা স্থাপন করেন তারা। দেশে তেল উৎপাদনে নতুন দিগন্তের সূচনা করে এই গ্রুপ। এরপর ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাট শিল্প এলাকায় নির্মাণ করা হয় এসএ অয়েল ফ্যাক্টরি। ১৯৯৭ সালে তারা প্রতিষ্ঠা করে সামান্না সুপার অয়েল ফ্যাক্টরি।

২০০০ সালে নারায়ণগঞ্জে কামাল ভেজিটেবল অয়েল ফ্যাক্টরি নামে একটি তেল কারখানা স্থাপন করে এসএ গ্রুপ। একই বছর আরও একটি মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলে গ্রুপটি। তখন নিউজিল্যান্ড থেকে দুধ এনে দেশের বাজারে বিপণন শুরু করে তারা। পরের বছর ২০০১ সালে পতেঙ্গায় দেশের অন্যতম বৃহৎ এডিবল অয়েল ট্যাংক টার্মিনাল নির্মাণ করে এসএ গ্রুপ।

বর্তমানে এসএ গ্রুপের ছয়টি কনজুমার পণ্য রয়েছে। এগুলো হচ্ছে মুসকান সয়াবিন অয়েল, আপ্যায়ন ভেজিটেবল অয়েল, গোয়ালিনী ফুলক্রিম মিল্ক পাউডার, গোয়ালিনী কনডেন্সড মিল্ক, মুসকান মিনারেল ওয়াটার ও মুসকান চা। ইতোমধ্যে দেশের ভোজ্যতেল বাজারে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে মুসকান। অপরিশোধিত তেল আমদানি করে নিজেদের শোধনাগারে পরিশোধন করে মুসকান তেল বিপণন করে এসএ গ্রুপ। একই সঙ্গে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে তাদের বোতলজাত পানির ব্র্যান্ড মুসকান মিনারেল ওয়াটারও। এছাড়া পাস্তুরিত দুধ, ময়দা, সেমাই, লবণ প্রভৃতি বাজারজাত করার পরিকল্পনা করছে তারা।

২০০৭ সালে কাগজ উৎপাদনে নামে গ্রুপটি। তখন চট্টগ্রামে এসএ পেপার নামে একটি কারখানা স্থাপন করা হয়। প্রায় একই সময় বেভারেজ খাতেও বিনিয়োগ করে এ গ্রুপ।

বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এম শাহাবুদ্দিন আলম। তিনি প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ সামশুল আলমের ছেলে।

এ গ্রুপের অধীনে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষের। গ্রুপটির বার্ষিক আয়ের পরিমাণ ২৫ বিলিয়ন টাকা। নানা ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এ গ্রুপ। সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে তারা নানা সময় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হাসপাতালে অনুদান দিয়ে থাকে। বনায়ন কর্মসূচিতেও তাদের ভূমিকা রয়েছে।

একনজরে এসএ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান: এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, কামাল ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেড, সামনাজ সুপার অয়েলস লিমিটেড, সামনাজ কনডেন্সড মিল্ক লিমিটেড, সামনাজ ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, শারিজা অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, সাউথ ইস্টার্ন অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, লায়লা ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, লায়লা অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, লায়লা বনস্পতি প্রোডাক্টস লিমিটেড, এসএ সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এসএ কনজুমারস প্রোডাক্টস লিমিটেড, এসএ বেভারেজ লিমিটেড, এসএ পাল্প অ্যান্ড পেপার প্রোডাক্টস লিমিটেড, এসএ প্রপার্টিজ লিমিটেড, এসএ পাওয়ার জেনারেটর লিমিটেড, এসএ ট্যাংক টার্মিনাল লিমিটেড, এসএ টেলিকম সিস্টেম লিমিটেড, এসএ লজিস্টিক লিমিটেড, শারিজা সিমেন্ট লিমিটেড, সাউথ ইস্টার্ন পেপার মিলস লিমিটেড, সাউথ ট্যাংক টার্মিনাল ও সারিজা নেভিগেশন লিমিটেড।