আস্থা সংকটে পুঁজিবাজারে ফের দরপতন

হাসানুজ্জামান পিয়াস: পুঁজিবাজারে টানা পতনের পর চলতি সপ্তাহে দুই কার্যদিবস বাজার ঘুরে দাঁড়ালেও ফের গতকাল পতন দেখা গেছে। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্নায়ুচাপে ভুগছেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। এতে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রতিদিনই শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গতকালও সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হলেও শেয়ার বিক্রির চাপে শেষ পর্যন্ত পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন এক শতাংশের বেশি পয়েন্ট হারিয়েছে ডিএসইএক্স। পাশাপাশি স্টক এক্সচেঞ্জের দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। তবে বাজারপতনের মূলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট কাজ করছে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। কিন্তু বাজারে এমন কোনো পরিস্থিতি হয়নি, যার জন্য লাগাতার পতন হতে পারে। মূলত বিনিয়োগকারীরা ভয় পেয়ে পেনিক সেল করছেন, যার প্রভাবে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। তাদের শেয়ার বিক্রির চাপে বাজারে নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের মনোগত কারণে পতন আরও ঘনীভূত হচ্ছে। তাদের আস্থা বাড়লে পুঁজিবাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে।

মূলত দেশে গ্যাসস্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ ঘাটতি, মুদ্রাস্ফীতির চাপ, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধসহ টাকার অবমূল্যায়নের মতো বিষয়গুলো বিনিয়োগকারীদের স্নায়ুচাপে ফেলে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি আস্থাহীনতায় ভুগছেন। ফলে যখনই সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে, তখনই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। ক্রেতা সংকটের কারণে এ প্রবণতার মাত্রা আরও তীব্রতর হয়ে উঠছে। এতে ইতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত দিনশেষে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন শেষ হয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরুতেই নিন্মমুখী ছিল সূচক। কিন্তু ২৫ মিনিট পর সূচক ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। এরপর বেলা ১১টা থেকেই শেয়ার বিক্রির চাপে দরপতন হতে থাকে, যা লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ফলে দিনশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ৭৪ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৩৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ২৭ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ১৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া শরিয়াহ্ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ১৪ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি অব বাংলাদেশ (বেক্সিমকো) লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি, ব্র্যাক ব্যাংক ও লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ারের।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০