শেয়ার বিজ ডেস্ক : উত্তর সাগরে ব্রিটেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তেলক্ষেত্র ফোর্টিসের পাইপলাইনে ফাটল ধরা পড়েছে। মেরামতের জন্য কয়েক সপ্তাহ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে বাজারে সরবরাহ কমার আশঙ্কায় পণ্যটির দামে প্রভাব পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্রেন্ট তেলের দাম ২০১৫ সালের জুনের পর সর্বোচ্চে পৌঁছায়। অর্গানাইজেশন অব পেট্রল এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজের (ওপেক) সদস্য ও অন্য প্রধান দেশগুলো সম্প্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন হ্রাস চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হওয়ায় পণ্যটির দাম আগে থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল। খবর রয়টার্স।
গতকাল লন্ডন ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে ব্রেন্ট তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম বেড়েছে ৬৩ সেন্ট বা এক শতাংশ। এদিন বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে ৬৫ ডলার ৩২ সেন্টে। লেনদেনের শুরুতে পণ্যটির দাম ৬৫ ডলার ৭০ সেন্টে পৌঁছেছিল। ২০১৫ সালের জুনের পর এ প্রথম ৬৫ ডলার ছাড়াল।
অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটে (ডব্লিউটিআই) ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম বেড়েছে ৩৯ সেন্ট বা দশমিক সাত শতাংশ। সর্বশেষ লেনদেনে এ বাজারে পণ্যটির দাম ব্যারেল বিক্রি হয় ৫৮ ডলার ৩৮ সেন্টে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক ফরেন এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ওয়ানডা’র বাজার বিশ্লেষক জেফরি হ্যালি বলেন, পাইপলাইনে ফাটল মেরামতে কয়েক সপ্তাহের জন্য ফোর্টিসের কার্যক্রম বন্ধ থাকার খবরে বাজারে ব্রেন্ড তেলের দাম বেড়েছে।
উত্তর সাগরে অবস্থিত ওই তেলক্ষেত্রটি ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় অয়েল পাইপলাইন। প্রতিদিন চার লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল তেল ধারণক্ষমতা রয়েছে এটির। ত্রুটি ধরা পড়ায় গত সোমবার কর্তৃপক্ষ এর কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করে।
অবশ্য বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ার পেছনে রাশিয়াসহ ওপেকের সদস্য দেশগুলো সম্প্রতি উত্তোলন হ্রাস চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোরও ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ধরে রাখতে অপরিশোধিত তেলের উত্তোলন হ্রাস চুক্তির মেয়াদ আরও ৯ মাসের জন্য বাড়াতে সম্মত হয়েছে ওপেক এবং অপেকবহির্ভূত অন্য প্রধান উত্তোলক দেশগুলো। গত ৩০ নভেম্বর অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ওপেক সম্মেলনে দেশগুলোর নেতারা এ সিদ্ধান্ত নেন। আর এ সিদ্ধান্তে গতকাল শুক্রবার পণ্যটির দাম কিছুটা বেড়ে যায়।
২০১৪ সালের শেষ সময় থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দরপতন শুরু হয়। ক্রমাগত দরপতন ঠেকাতে ওপেকভুক্ত দেশগুলো পণ্যটির সম্মিলিত উত্তোলন কমিয়ে আনতে চুক্তি স্বাক্ষর করে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চুক্তির শর্ত বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে এর মেয়াদ আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।