আয়কর কমালে ভালো মানের কোম্পানিগুলো বাজারে আসবে

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

নিজস্ব প্রতিবেদক: আমাদের দেশে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে আয়কর হার ৩৫ শতাংশ থেকে শুরু করে আরও বেশি। এই ট্যাক্সের ভয়ে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসতে চায় না। যেখানে ট্যাক্স রেট কম, সেখানে বহুজাতিক ও বিদেশি  বিনিয়োগকারীদের আগ্র্রহ বেশি থাকে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য ট্যাক্স রেট ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনলে ভালো মানের কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট সাইফ ইসলাম দিলাল এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মো. ফোরকান উদ্দিন, এফসিএ।

সাইফ ইসলাম দিলাল বলেন, এখন পুঁজিবাজার ভালোÑএটা নিঃসন্দেহ বলা যায়। সামনে আরও ভালো হবে। সামনে যে কৌশলগত অংশীদার আসছে, তাতে বাজার আরও ভালো হবে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় পুঁজিবাজার সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে যে কোম্পানিগুলো আছে, তারচেয়ে আরও ভালো কোম্পানি আনতে হবে। তা না হলে কয়েকটি ভালো কোম্পানি দিয়ে সামনে এগোনো যাবে না। আরও বহুজাতিক ও সরকারি কোম্পানি আনতে হবে। এখনও ব্যাংক খাত ভালো অবস্থানে আছে। অন্য কোম্পানির শেয়ারের তুলনায় ব্যাংক শেয়ার অনেক নিরাপদ। বিনিয়োগকারীদের বুঝতে হবে তারা কোথায় বিনিয়োগ করবেন? তারা দীর্ঘমেয়াদি মুনাফার দিকে যাবেন, না সাময়িক মুনাফার দিকে যাবেন। কেউ যদি সাময়িক মুনাফার দিকে যান, সেক্ষেত্রে  লোকসানের দায় তাকেই নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বুঝেশুনে বিনিয়োগ করতে হবে। কারও প্রলোভনে পড়ে বিনিয়োগ করা যাবে না। বিনিয়োগ করার আগে কোম্পানির ইতিহাস, উদ্যোক্তা কারা, লভ্যাংশ দেওয়ার  রেকর্ড ও ম্যানেজমেন্টে কারা আছে প্রভৃতি দেখতে হবে।

মো. ফোরকান উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশে বড় কোম্পানি হাতেগোনা ৩০ থেকে ৪০টির বেশি হবে না। বিজনেস সেক্টর হিসেবে চিন্তা করলে বর্তমানে ফার্মাসিউটিক্যাল, কিছু বহুজাতিক কোম্পানি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কয়েকটি ভালো করছে। সেগুলো কিন্তু পুঁজিবাজারে এসেও গেছে। আমরা  যেসব বড় কোম্পানির কথা বলছি, সেক্ষেত্রে আমাদের প্রধান ফোকাস হচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর দিকে। কিন্তু কোম্পানিগুলোকে আনবে কে? এর দায়িত্ব সরকারের। তারা আইন করে সাহায্য করবে। এ সরকারের প্রতিনিধিদের একটি হচ্ছে বিএসইসি। বিএসইসি এমনভাবে পলিসি প্রণয়ন করবে, যাতে পুঁজিবাজার ইতিবাচক দিকে অগ্রসর হয়।

বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বুঝেশুনে বিনিয়োগ করেন। এফডিআরের জন্য কোম্পানির ট্যাক্স রেট কমাতে হবে। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে কোম্পানির  ট্যাক্স রেট ৩৫ শতাংশ, ৩৭ শতাংশ ও ৪৫ শতাংশ। এই ট্যাক্সের ভয়ে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আসতে চায় না। যেখানে ট্যাক্স রেট কম, সেখানে বহুজাতিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হন। মূল কথা হচ্ছে, আগে এ জায়গা ঠিক করতে হবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য ট্যাক্স রেট ২৫ শতাংশে নিয়ে আসেন। তাহলে দেখবেন পুঁজিবাজারে বহু ভালো মানের কোম্পানি আসবে। তখন সরকারের পলিসি করতে হবে না। বিএসইসির নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে না। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে কোম্পানির পেছনে দৌড়াতে হবে না। তিনি আরও বলেন, পাবলিক কোম্পানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ ট্যাক্স রেটের বেশি কোনোমতেই যৌক্তিক নয়। প্রাইভেট কোম্পানির ক্ষেত্রে ট্যাক্স রেট ৩০ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়। যদি এটা করা যায়, তাহলে দেখবেন কতগুলো ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০