আয়কর মেলা শুরু: প্রথম দিনে আদায় ২০৮ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকাসহ দেশব্যাপী জাতীয় আয়কর মেলা শুরু হয়েছে কাল। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্মাণাধীন জাতীয় রাজস্ব ভবনে মেলার উদ্বোধন করেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার প্রথম দিনে ঢাকা ও আট বিভাগীয় শহরসহ ২০টি স্থানে আয়োজিত মেলা থেকে ২০৮ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এদিন মেলায় প্রায় ৮০ হাজার করদাতাকে সেবা দেওয়া হয়েছে।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমএ মান্নান বলেন, সরকারকে জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়েই দেশের উন্নয়ন করতে হয়। একজনের সম্পদের একটি অংশ থেকে অন্য একজনের চাহিদা পূরণ করতে হয়। ফলে সরকারকে অর্থ সংস্থান দেওয়ার জন্য সবাইকে কর দিতে হবে। আয়করকে মানুষের মধ্যে সহজতর করতে ২০১০ সালে প্রথম এ মেলার আয়োজন করা হয়। তখন মেলা থেকে ১১৩ কোটি টাকার কর আহরিত হলেও গত বছর তা দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এবারের মেলায় এটি তিন হাজার ছাড়াবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এবার মেলায় সেবার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। ভবিষ্যতে তা আরও বাড়ানো হবে।

অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, রূপকল্প বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। দেশের উন্নয়নে মানুষের কাছ থেকে কর আদায় করে এনবিআর। পদ্মা সেতু, উড়াল সড়কসহ বড় বড় অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে তাকিয়েই মানুষের কর দেওয়া উচিত। আয়কর মেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে করদাতারা কর প্রদান ও সেবা গ্রহণ করছেন। এনবিআর কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ সেবা প্রদানে প্রস্তুতি নিয়েছেন। এবারের মেলায় আমরা প্রাথমিকভাবে করদাতাদের একটি ইনকাম ট্যাক্স আইডি কার্ড দিচ্ছি। ঢাকা ও চট্টগ্রামের আয়কর মেলায় এ কার্ড দেওয়া হচ্ছে। তবে সিলেটে আয়কর অফিস তাদের নিজেদের উদ্যোগে এ কার্ড দিচ্ছে।

জানা গেছে, এবারের মেলার প্রথম দিনে আগের যে কোনো বছরের চেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছে এনবিআর। প্রথম দিনে সারা দেশে আয়কর সেবা নিয়েছেন ৭৯ হাজার ১১২ জন, যা গত বছরের প্রথম দিনের চেয়ে ১৯ হাজার ৮২০ জন বেশি। প্রথম দিন আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন ৩০ হাজার ৪১ জন, যা গত বছরের চেয়ে ১৪ হাজার ৯৫৫টি বেশি। আর গত বছরের তুলনায় অতিরিক্ত আয়কর আহরণ হয়েছে ১৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে এ মেলা। ১-৭ নভেম্বর ঢাকাসহ আট বিভাগীয় শহর, ৫৬ জেলা ও ৮৭ উপজেলাসহ সারা দেশের ১৫১টি জায়গায় এ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এর মধ্যে সব বিভাগীয় শহরে এক সপ্তাহ, সব জেলা শহরে চার দিন, ৩২ উপজেলা শহরে দুদিন এবং ৭১ উপজেলায় একদিন (ভ্রাম্যমাণ) এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার মেলায় ১০টি বুথে স্মার্টকার্ড ও ১০২টি বুথ থেকে করসেবা  দেওয়া হচ্ছে। এসব বুথে করসেবা তথ্যকেন্দ্র, ই-টিআইএন নিবন্ধন, পুনর্নিবন্ধন ব্যবস্থা, রিটার্ন দাখিল করা, ই-পেমেন্ট কর পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বয়স্ক নাগরিক, প্রতিবন্ধী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা বুথ রাখা হয়েছে। কর পরিশোধের জন্য মেলায় রয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের বুথ। এনবিআরের রাজস্ব আহরণের অন্যান্য খাত শুল্ক ও ভ্যাট বিষয়েও পৃথক বুথ রয়েছে মেলা প্রাঙ্গণে। তবে আয়কর মেলা শেষ হলেও ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন করদাতারা।

জানা গেছে, এবারের মেলায় ১৫ লাখ করদাতাকে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এনবিআর। সর্বশেষ গত বছর আয়কর মেলায় এসে সেবা নিয়েছেন ১১ লাখ করদাতা, যা তার আগের বছরের চেয়ে এক লাখ ৭২ হাজার বেশি। তাদের মধ্যে এক লাখ ৯৪ হাজার করদাতা রিটার্ন জমা দেওয়ার বিপরীতে দুই হাজার ১৩০ কোটি টাকা আয়কর দিয়েছেন। গতবারের মেলায় নতুন কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নেওয়ার মাধ্যমে করের খাতায় নাম লিখিয়েছেন ৩৬ হাজার ৮৫৩ জন।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০