আয়ে পেছালেও লভ্যাংশে এগিয়েছে ব্যাংক খাত

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে। ২০১৮ সালের আর্থিক বছর শেষে ১৯টি ব্যাংকের ইপিএস আগের চেয়ে কমে গেছে। তবে ২০১৮ সালে আগের বছরের চেয়ে গড় লভ্যাংশ বেড়েছে। ডিএসই সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮ সালে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের গড় লভ্যাংশ ঘোষণার পরিমাণ বেড়েছে এক দশমিক ৩৬ শতাংশ। ২০১৭ সালে তালিকাভুক্ত ৩০ ব্যাংকের গড় লভ্যাংশ ঘোষণার পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ, যা ২০১৮ সালে বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এর আগে ২০১৬ সালে তালিকাভুক্ত ৩০ ব্যাংকের গড় লভ্যাংশ ঘোষণার পরিমাণ ছিল ১৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২০১৭ সালে তা কমে আসে ১৫ দশমিক শূন্য তিন শতাংশে। অর্থাৎ ওই বছর লভ্যাংশ কমেছিল প্রায় দুই শতাংশ।
এ বছর ১৫০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ প্রদান করে সবার ওপরে আছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক। তারা শেয়ারহোল্ডারদের ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা উত্তরা ব্যাংক লভ্যাংশ দেয় ২২ শতাংশ। পরের অবস্থানে ছিল যমুনা ব্যংক। এই প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ প্রদানের হার ২০ শতাংশ।
বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেন, ২০১৮ সালে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংক তুলনামূলকভাবে বেশি লভ্যাংশ প্রদান করে, যে কারণে গড় লভ্যাংশ বেড়েছে। এটি পুঁজিবাজারের সবচেয়ে শক্তিশালী খাত বলে উল্লেখ করে তারা বলেন, অন্য খাত থেকে ব্যাংক খাত সব সময় ভালো রিটার্ন দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে ব্যাংক খাতে মন্দার কারণে গত কয়েক বছর এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সেই ধারা অব্যাহত নেই।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, গত বছর বাজারে পতন থাকলেও কিছু শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে উঠেছে। কিন্তু একটি ব্যাংক শেয়ারও এখনও অতিমূল্যায়িত হয়নি। তাছাড়া এ খাতের বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর এখনও অনেক কম রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘসময় নিয়ে বিনিয়োগ করলে এখান থেকে ভালো রিটার্নের প্রত্যাশা করতেই পারেন। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে কম প্রতারিত হন।
একই প্রসঙ্গে ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী বলেন, বিনিয়োগকারী সব সময় ভালো শেয়ারের সঙ্গে থাকতে চান। সার্বিক বিবেচনায় এখনও অধিকাংশ ব্যাংক শেয়ারে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। সাম্প্রতিক দরপতনে এসব শেয়ারের দর কমে গেছে। কোনো বিনিয়োগকারী যদি এ সময়ে এ খাতের ভালো ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন, তবে তারা ভালো রিটার্ন আশা করতেই পারেন।
এদিকে ব্যাংকের পিইরেশিও এখনও ১০-এর নিচে অবস্থান করছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, যে কোনো খাত বা কোম্পানির ক্ষেত্রে এই রেশিও বিনিয়োগের উপযোগী। কোনো প্রতিষ্ঠানের পিই ২০-এর ওপরে চলে গেলে ধীরে ধীরে ওই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
অন্যদিকে ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইপিএস কমেছে ৬০ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠানের। এদের মধ্যে বেশি ইপিএস কমেছে ওয়ান ব্যাংকের। এই ব্যাংকটির ইপিএস কমেছে ৪৯ শতাংশ। আইএফআইসি ব্যাংকের ইপিএস কমেছে ৪৭ শতাংশ।
অন্য ব্যাংকগুলো হচ্ছে রূপালী ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক এবং এনসিসি ব্যাংক। বাকি ব্যাংকগুলোর ইপিএস আগের চেয়ে বেড়েছে। ২০১৮ সালে সবচেয়ে বেশি হারে ইপিএস বেড়েছে পূবালী ব্যাংকের।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০