নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েকদিন ধরে টানা দর বাড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফাইন ফুডের। অথচ প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বাড়েনি। তবে কী কারণে দর বাড়ছে- সে সম্পর্কে কোম্পানির পক্ষ থেকেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২৯ মে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বোচ্চ ২৫ টাকা ৯০ পয়সা বেচাকেনা হয়েছে। এরপর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর দুটি পতন হয়েছে। কিন্তু গতকাল বুধবার পর্যন্ত টানা দর বাড়তে থাকে। গতকাল কোম্পানির শেয়ারদর সর্বশেষ ৩১ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। অর্থাৎ চলতি মাসের কয়েকদিনের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর প্রায় ছয় টাকা বা ২০ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে, কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১১ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১১ পয়সা।
আয় না বাড়লেও কী কারণে শেয়ারে দর বাড়ছেÑতা জানতে কোম্পানি সচিব সোহেল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
কোম্পানির লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, কোম্পানিটি ২০১২ সালে ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। পরের বছরই দুই শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর হয়। ২০১৪ সালে লভ্যাংশ না দিয়ে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর হয়। পরের বছর একই ক্যাটাগরিতে থাকলেও গত সমাপ্ত বছরে ২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে আবারও ‘বি’ক্যাটাগরিতে ফিরে আসে।
আয় না বাড়লে কোম্পানির শেয়ারদর টানা বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের সংশয় দেখা দিয়েছে। মন্দা বাজারে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কোনো অসৎ চক্র জড়িয়ে পড়ছে কিনা তা নিয়েও আশঙ্কা করছেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের শুরুতে বাজার স্বাভাবিক গতি পেলেও তা বেশিদিন টেকেনি। ফেব্রুয়ারি থেকে তা আবারও মন্দা বাজারে রূপ নেয়। এ মন্দা বাজারে কিছু দুর্বল কোম্পানি নিয়ে একটি অসৎ চক্র মেতে ওঠে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে দর বাড়িয়ে সুযোগমতো তারা মুনাফা হাতিয়ে নিয়ে বাজার থেকে বেরিয়ে যায়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই দুর্বল কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয় তারা। কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগের পূর্বে তাদের ইতিহাস খোঁজখবর নিয়ে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন তারা।
এ সম্পর্কে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা বার বারই বলছি কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের পূর্বে তার ইতিহাস পর্যালোচনা করুন। কোম্পানি কে চালায়, তাদের ফিউচার কী- সবকিছু জেনে তারপর কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করুন। জেনে-শুনে দুর্বল কোম্পানিতে লোভে পড়ে বিনিয়োগ করা উচিত নয়’ বলে মনে করেন তিনি।
পুঁজিবাজারে ২০০২ সালে তালিকভুক্ত হওয়া ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা এক কোটি ৩৩ লাখ ৮৯৪ টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তাদের কাছে এক দশমিক শূন্য সাত শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে চার দশমিক ১৩ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
Add Comment