Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:42 pm

ইইউ’র অনুরোধ প্রত্যাখ্যান যুক্তরাষ্ট্রের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে মুক্ত রাখতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ পর্যায় থেকে করা অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইইউকে লেখা এক চিঠিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করছে, কারণ তারা ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি করতে চায়। ইরানকে তখনই ছাড় দেওয়া হবে, যখন তা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য লাভজনক হবে। খবর বিবিসি।
২০১৫ সালের জুনে তেহরানের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে ছয় জাতিগোষ্ঠী চুক্তি স্বাক্ষর করে। ভিয়েনায় নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য রাষ্ট্র (পি-ফাইভ) যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানি (ওয়ান) চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। আর বিনিময়ে ইরানের ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। ওই সময় বেশ কিছু ইউরোপীয় কোম্পানি ইরানের সঙ্গে বড় ধরনের ব্যবসা শুরু করে।
তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে গত ৮ মে তা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দিলেও নিজেদের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা নিশ্চিত করেছে তিন ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেন। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বাকি দুই দেশ রাশিয়া ও চীনও রয়েছে একই অবস্থানে। আর চুক্তি থেকে সরে যাওয়ায় আগামী নভেম্বর মাস থেকে ইরানের ওপর স্থগিত রাখা নিষেধাজ্ঞা আবারও কার্যকর করবে যুক্তরাষ্ট্র। ইইউর আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে শত শত কোটি ডলারের বাণিজ্য বিপন্ন হয়ে যেতে পারে। দেশগুলো ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে বাদ রাখার আহ্বান জানিয়েছিল। এবার তাও প্রত্যাখ্যান করল ট্রাম্প প্রশাসন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ওই চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিনও স্বাক্ষর করেছেন। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা ইরান সরকারের ওপর নজিরবিহীন অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে চাই।’ এতে আরও বলা হয়, খুব নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতি ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এই নীতিতে ছাড় দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।
২০১৭ সালে ইউরোপ ইরানে মোট এক হাজার ৮০ কোটি ইউরোর পণ্য ও সেবা রফতানি করেছে। একই সময় দেশগুলো ইরান থেকে প্রায় এক হাজার ১০ কোটি ইউরোর পণ্য আমদানিও করেছে। এখন ইরানের সঙ্গে চুক্তি অব্যাহত রাখলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বছরের শুরুর দিকে ইইউ বলে আসছিল, তারা তাদের কোম্পানিগুলোকে ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করতে দেবে।