ইইউ দেশগুলোয় কমেছে গ্যাসের ব্যবহার

শেয়ার বিজ ডেস্ক: গ্যাস এক্সপোর্টিং কান্ট্রিস ফোরামের (জিইসিএফ) মাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। তারা এক বছরে ২০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমিয়েছে। খবর: আরটি।

রাশিয়ার গণমাধ্যম আরটি নিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত জুন মাসে মোট ১১ দশমিক ছয় বিলিয়ন ঘনমিটার (বিসিএম) এলএনজি আমদানি করে ইইউ। চলতি বছরের প্রথমার্ধে ২৭ দেশের সংগঠনটি বার্ষিক হারে ১০ শতাংশ কমিয়েছে, যার পরিমাণ ১৭৮ বিসিএম।

রাশিয়া ও নরওয়ে থেকে গ্যাসের আমদানি কমিয়ে দেয়ায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে পাইপলাইন গ্যাসের সরবরাহ প্রায় ৩৪ শতাংশ কমে ৭৬ দশমিক ৭ বিসিএম হয়েছে।

জিইসিএফ বলছে, গ্যাস আমদানি কমে যাওয়ার পেছনে ক্রমবর্ধমান বায়ু ও সৌরশক্তির ব্যবহার প্রভাব ফেলছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমানোয় সামগ্রিকভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের হার কমেছে।

সংস্থাটি জানায়, ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত গ্যাসের চাহিদা স্বেচ্ছায় ১৫ শতাংশ কমানোর প্রচার চালিয়েছে ইইউ, যা গ্যাসের ব্যবহারকেও প্রভাবিত করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতি গ্যাসের দাম কমলেও শিল্প খাতের গ্যাসের চাহিদা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। এই চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করা এখনও সম্ভব হয়নি।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বছরে প্রায় ১৭ শতাংশ কমেছে। ফলে মোট বিদ্যুতের উৎপাদন কমেছে ৭ শতাংশ বা ১৮২ টেরাওয়াট-ঘণ্টা। এছাড়া কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনও ৩৯ শতাংশ কমেছে।

ইইউ এর আগে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির মাধ্যমে ওই অঞ্চলের গ্যাসের চাহিদার

দুই-পঞ্চমাংশ পূরণ করত। অবশ্য ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আক্রমণের পর দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর গত বছর স্বেচ্ছায় ইইউভুক্ত সদস্য দেশগুলো ১৫ শতাংশ গ্যাসের চাহিদা কমানোর ঘোষণা দেয়। ইউক্রেনে আগ্রাসনের আগে রাশিয়া ইউরোপের প্রায় ৪০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করত। বর্তমানে তা প্রায় ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে। গ্যাসনির্ভর শিল্পগুলো চাপে পড়েছে। এমন কিছু শিল্পে গ্যাস ব্যবহার করা হয়, যা বেশিরভাগ মানুষ সামনে থেকে দেখতে পান না। যেমন গাড়ির জন্য ইস্পাত ও কাচের বোতল তৈরি, দুধ ও পনির পাস্তুরিত করা প্রভৃতি। ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানি সতর্ক করে বলেছে, তাপ উৎপাদনে জ্বালানি তেল বা বিদ্যুতের মতো অন্যান্য শক্তিতে রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়। কিছু ক্ষেত্রে গলিত ধাতু বা কাচ ব্যবহার করতে হয়, এমন সরঞ্জাম তাপ বন্ধ হয়ে গেলে নষ্ট হয়ে যায়। এরই মধ্যে জ্বালানির উচ্চ দাম ইউরোপকে রেকর্ড মূল্যস্ফীতির মাধ্যমে মন্দার হুমকি দিচ্ছে। খাদ্য, জ্বালানি ও ইউটিলিটি খরচ বাড়ার সঙ্গে ভোক্তাদের ব্যয় কমানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। একটি সম্পূর্ণ কাট অফ এরই মধ্যে সমস্যায় জর্জর অর্থনীতির জন্য আরও বড় আঘাত হতে পারে।

ইউরোপিয়ান এনভায়রনমেন্টাল ব্যুরোর মতে, ইইউভুক্ত ২৭টি দেশের মধ্যে ১৪টি দেশ গ্যাসের ব্যবহার কমাতে অন্য শক্তির অপচয় ও খরচ কমানোর জন্য বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এই ১৪টি দেশের মধ্যে পাঁচটি দেশ জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন ও পর্তুগাল তাদের গ্যাসের চাহিদার ৬০ শতাংশ কাটছাঁট করতে পেরেছে। যদিও বুলগেরিয়া, লাটভিয়া ও রোমানিয়া এখনও জ্বালানি সাশ্রয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ

নেয়নি। কেননা এসব দেশে গ্যাসের চাহিদাও তুলনামূলক কম।  যদি গ্যাসের ঘাটতি আরও বাড়ে বা উচ্চ চাহিদার ঝুঁকি থাকে, তবে ইউরোপজুড়ে বাধ্যতামূলক হ্রাস আরোপের ক্ষমতা চাইছে ইইউয়ের নির্বাহী শাখা ইউরোপীয় কমিশন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০