প্রতিনিধি, দিনাজপুর : ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি রবিউল ইসলামকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক সাদিয়া সুলতানা এই রায় ঘোষণা করেন। দিনাজপুর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউশন পিপি এ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম রবি রায় ঘোষনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও হত্যা চেষ্টা মামলায় দন্ডবিধি ৩০৭ ধারায় ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদন্ড এবং দন্ডবিধি ৩২৫ ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড, ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করেছেন বিজ্ঞ বিচারক।
তিনি জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর ওই মামলাটির যে যুক্তিতর্ক শেষ হয়। আজ ৮ নভেম্বর একমাত্র আসামীর উপস্থিতিতে এই মামলার রায় ঘোষনা করা হয়। তিনি আরও জানান, মামলাটিতে মোট ৫৩ জন সাক্ষী দিয়েছেন। মামলায় একমাত্র আসামি ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের বরখাস্ত মালি রবিউল ইসলাম উচ্চতর আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন তবে তার উপস্থিতিতেই আদালতে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি ডাক বাংলাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় তাদেরকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দুপুর ১টায় হেলিকপ্টার যোগে ওয়াহিদা খানমকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এই ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর ওয়াহিদা খানমের ভাই পুলিশ পরিদর্শক শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা করেন। পরে মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিবি পুলিশ তদন্ত করে ১১ সেপ্টেম্বর মালি দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ভীমপুর গ্রামের মৃত খতিব উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। একই বছরের ১২ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আদালতের আদেশে ডিবি পুলিশের হেফাজতে ৯ দিনের রিমান্ডে ছিল। ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ২১ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন তৎকালীন ডিবির ওসি ইমাম জাফর।