নিজস্ব প্রতিবেদক: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি উড়োজাহাজে ময়লা ফেলার পলিথিন থেকে ৮ কেজি ১২০ গ্রাম ওজনের ৭০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে ঢাকা কাস্টম হাউস। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। গতকাল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের শারজাহ থেকে আসা বিএস ৩৪৬ ফ্লাইট থেকে এসব স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিমানবন্দরে চোরাচালান রোধে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা কাস্টম হাউসের প্রিভেনটিভ টিম নজরদারি বাড়ায়। পরে শারজাহ থেকে আসা একটি ফ্লাইট থেকে এসব স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা কাস্টম হাউসের উপকমিশনার (প্রিভেনটিভ) মো. সানোয়ারুল কবীর বলেন, সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইট ঢাকায় আসে। সেখানে ময়লা ফেলার পলিথিন থেকে ৭০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, দুবাই থেকে তিন যাত্রী পায়ুপথে স্বর্ণ নিয়ে এসেছেন। তারা ভেবেছেন বিমানবন্দর পার হয়ে যাবেন। কিন্তু কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের চোখ এড়াতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত পায়ুপথ থেকে উদ্ধার করা হলো সেই স্বর্ণ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই থেকে আগত তিন যাত্রী এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তিন যাত্রী থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার করেছেন। আটক করা হয়েছে তিন যাত্রীকে।
কাস্টমস গোয়েন্দা সূত্রমতে, স্বর্ণ চোরাচালানের তথ্য পান কাস্টমস গোয়েন্দার মহাপরিচালক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মহাপরিচালকের নির্দেশনা মোতাবেক যুগ্ম পরিচালক-২ এবং শিফট ইনচার্জ উপ-পরিচালকের তত্ত¡াবধানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সি-শিফটের কাস্টমস গোয়েন্দা দল এয়ারপোর্টের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। দুবাই থেকে ইকে৫৮৪ ফ্লাইটে আগত যাত্রীদের নজরদারিতে রাখা হয়। ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর গোপন সংবাদেও ভিত্তিতে তিন যাত্রীকে শনাক্ত করা হয়। তাদের গ্রিন চ্যানেলে এনে হ্যান্ড লাগেজ তল্লাশি করে প্রত্যেক জনের কাছে দুটি করে স্বর্ণের বার (২৩২ গ্রাম) এবং ৯৯ গ্রাম করে স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। যাত্রীদের কাছে ব্যাগেজ সুবিধার অতিরিক্ত স্বর্ণ আছে কি না, তা জিজ্ঞাসা করলে তারা অতিরিক্ত স্বর্ণ থাকার কথা অস্বীকার করেন।
পরবর্তী সময়ে আর্চওয়েতে তাদের দেহ তল্লাশির সময় মৃদু শব্দ অনুভ‚ত হওয়ায় তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা তাদের রেক্টামে স্বর্ণ থাকার কথা স্বীকার করেন। বিমানবন্দরে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে প্রত্যেক যাত্রী তাদের রেক্টাম থেকে স্কচটেপে মোড়ানো অবস্থায় ৮৮০ গ্রাম করে স্বর্ণের পেস্ট বের করে দেয়। যাত্রী তিনজনের সমুদয় স্বর্ণ অর্থাৎ ৩৬৩৩ গ্রাম (প্রত্যেক জনের কাছে ১২১১ গ্রাম) বা তিন কেজি ৬০০ গ্রাম স্বর্ণ আটক করা হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৫৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা। যাত্রী তিনজনকে আসামি করে ঢাকা বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।