আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের সমুদ্রতীরবর্তী মারিউপুল ও ভোলনোভখ নামক দুই শহরে বেসামরিক লোকজনকে যুদ্ধস্থল থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে খণ্ডকালীন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া। বেলারুশে রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র।
শুক্রবার (৪ মার্চ) মস্কোতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ, ৫ মার্চ মস্কোর স্থানীয় সময় বেলা ১০ টা থেকে খণ্ডকালীন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের মারিউপুল ও ভোলনোভখা’র বাসিন্দারা যেন নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারেন, সেজন্যেই এই যুদ্ধবিরতি দেওয়া হয়েছে।’
ওই মুখপাত্র আরও বলেন, বেসামরিক লোকজন শহরত্যাগের জন্য কোন কোন সড়ক ব্যবহার করবেন— সে সম্পর্কে মস্কোকে জানাতে সম্মত হয়েছে কিয়েভ।
কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করে ইউক্রেন। আর তারপরই এই ব্যাপারটিকে ঘিরে দ্বন্দ্ব শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে।
এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এর দুদিন পর গত ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গত ৯ দিনের রুশ অভিযানে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ ইউক্রেনীয়। এছাড়াও শতাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশুও।
বর্তমানে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ, খারকিভ, শেরনিগভ, মারিউপোল ও ভোলনোভাখা শহরে ব্যাপক সংঘাত হচ্ছে রুশ ও ইউক্রেন বাহিনীর সেনা সদস্যদের মধ্যে। এসবের মধ্যে মারিউপোল ও ভোলনোভাখা শহরের অবস্থা সবচেয়ে সঙ্গীন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সহকারী মিখাইল পোদোলায়াক।
সূত্র: স্পুটনিক