ইউক্রেনে হামলার চতুর্থ দিনে আরও দুই শহর অবরুদ্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কিয়েভসহ ইউক্রেনের শহরগুলোতে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। টানা চতুর্থ দিনের মতো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রুশ সেনাদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা। একদিনে দুটি শহর দখলের পাশাপাশি ইউক্রেনের দক্ষিণে এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আরও দুটি শহর পুরোপুরি অবরোধ করার কথা জানিয়েছে দেশটি।

রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনের জরুরি সার্ভিস বিভাগ জানিয়েছে, রকেট হামলা চালানো হয়েছে সেখানে। এতে একজন নারী নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে। সর্বশেষ পাওয়া খবরে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনে কমপক্ষে ২৪০ বেসামরিক লোক হতাহতের কথা জানা গেছে।

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত খেরসন শহর এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বারদিয়ানস্ক শহর রুশ সেনারা পুরোপুরি অবরোধ করেছে বলে দাবি করেছে মস্কো। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে চলমান সামরিক অভিযান আরও জোরদারের ঘোষণা দেওয়ার পর এই দুটি শহর অবরোধের খবর সামনে এলো।

বেশ কয়েকটি রুশ বার্তাসংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেঙ্কোভ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টা ধরে ইউক্রেনের খেরসন এবং বারদিয়ানস্ক শহর পুরোপুরি অবরোধ করে রেখেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।’

এছাড়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরুর চতুর্থ দিনে নোভা কাখোভকা নামে দেশটির একটি শহর দখলে নিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। নিউ কাখোভকা নামেও পরিচিত এই শহরটি ছোট হলেও কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কাখোভকা শহরটি দিনিপার নদীর তীরে অবস্থিত এবং এই নদীটি পানি পথে সরাসরি ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

কাখোভকা শহরের মেয়র ভলোদিমির কোভালেঙ্কো বলেছেন, রুশ সেনারা কাখোভকা শহরের প্রধান প্রশাসনিক ভবন দখল করার পর সেখান থেকে ইউক্রেনের সকল পতাকা সরিয়ে দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির ভেতরেই অবস্থানের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে শুক্রবার রাতে বিনা বাধায় ইউক্রেনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর মেলিতোপোল দখলে নেয় রুশ সেনারা। পরে শনিবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

মেলিতোপোল শহরে প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস। ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বের এই শহরটি ক্রিমিয়া ও আজভ সাগরের নিকটেই অবস্থিত। এছাড়া ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দখল পেতে জোরালো আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।

হামলার প্রথম দিন থেকেই এই সামরিক অভিযানকে সফল দাবি করছে রাশিয়া। তারা ইউক্রেনের বিমানঘাঁটিগুলোর সামরিক কাঠামো ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে। প্রথম দিনই রুশ সেনারা কিয়েভের উপকণ্ঠের আন্তোনোভ বিমানবন্দর দখলে নেন। নিয়ন্ত্রণে নেন বেলারুশ সীমান্তবর্তী চেরনোবিল পরমাণুকেন্দ্রেরও। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এদিকে, হামলার চতুর্থ দিনেও ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন বহু মানুষ। আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখের বেশি শরণার্থী ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে প্রবেশ করেছেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০