শেয়ার বিজ ডেস্ক: পোল্যান্ড সীমান্ত দিয়ে ইউক্রেন-প্রবাসী ২৪ বাংলাদেশিকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। গতকাল রাজশাহীতে আয়োজিত বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে বাংলাদেশ দূতাবাস ইউক্রেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ করে প্রায় ৩০০ বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ইউক্রেন থেকে বাংলাদেশিদের পোল্যান্ডে নিয়ে এসে আপাতত আশ্রয় দিতে আমরা নির্দেশ দিয়েছি। সেখানে থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে গত শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেন-প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ছাড়া প্রবেশ উম্মুক্ত করা হয় পোল্যান্ড-ইউক্রেন সীমান্তে। এ ক্ষেত্রে বৈধ পাসপোর্টধারীরা সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে পাসপোর্ট দেখিয়ে পোল্যান্ডে ঢুকতে পারবেন। যাদের পাসপোর্ট নেই, তারা ট্রাভেল পাস নিয়ে পোল্যান্ডে আশ্রয় নিতে পারবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানায় ওয়ারশতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
এ ছাড়া প্রত্যেক বাংলাদেশিকে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করেছে দূতাবাস।
দূতাবাস আরও জানায়, দূতাবাসের একটি দল গতকাল সকালে পোল্যান্ড-ইউক্রেন সীমান্তের পথে রওনা হবেন। ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের সহায়তা দেবেন তারা।
বাংলাদেশের টঙ্গীর মেয়ে রাবেয়া ইসলাম ব্যাংক থেকে বেরিয়ে প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর শনিবার ভোররাতে (বাংলাদেশ সময়) যখন কিয়েভের ৫৪০ কিলোমিটার দূরের লিভভ স্টেশনে পৌঁছান। তিনি বলেন, ‘স্টেশনে সব হারিয়ে ফেলেছি, এমনকি একমাত্র সঙ্গী টিনাকে হারিয়ে প্রায় একাই পুরোটা পথ পাড়ি দিয়েছি। ইউক্রেনের স্থানীয় সময় শনিবার পৌনে ১২টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর পৌনে ৪টা) ট্রেন ছাড়ে। লুভিয়েভ স্টেশনে পৌঁছাই রাত সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত সাড়ে ১২টায়)।’
রাশিয়া হামলার পরপর নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন ইউক্রেনের সবাই। হাজারো মানুষের সেই মিছিলে শামিল বাংলাদেশি শিক্ষার্থী শেখ খালেদ বিন সেলিম। ওডেসা স্টেশনে তিনি সঙ্গী পান আরও ছয় বাংলাদেশি তরুণকে। ওডেসা থেকে পোল্যান্ড সীমান্তবর্তী লিভভ শহরে পৌঁছানোর গল্প শোনান তিনি। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর কৃষ্ণসাগর তীরের শহর ওডেসা থেকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ পশ্চিম অঞ্চলের দিকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন খালেদ।
তিনি বলেন, ‘ওডেসার বাস এবং ট্রেন স্টেশন পাশাপাশি। লোকজন একটি টিকিটের জন্য মরিয়া হয়ে দুই জায়গায় ছোটাছুটি করছিল। ভাগ্যক্রমে আমি টিকিট পেয়ে যাই। স্টেশনে বাংলাদেশের আরও ছয়জন স্টুডেন্টের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। মানুষের প্রচণ্ড ভিড় থাকার কারণে ওই দিন ওডেসা থেকে বাড়তি একটি ট্রেন ছাড়া হয়। তারপরও অনেক মানুষ ট্রেনে উঠতে পারেনি। আমার সামনেই ভারতীয় স্টুডেন্টদের একটি দল অনেক রিকুয়েস্ট করেও ট্রেনে উঠতে পারল না। ইউক্রেনের অনেক নাগরিকও ট্রেনে উঠতে পারেননি।’