নিজস্ব প্রতিবেদক: চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধাক্কা লেগেছে দেশের সারের বাজারে। ইউরিয়া সারের দাম ডিলার পর্যায়ে ছয় টাকা বেড়েছে। বর্তমানে সারের ডিলার মূল্য ২০ টাকা এবং কৃষক পর্যায়ে করা হয়েছে ২২ টাকা। গতকাল সোমবার থেকে সারের এ দাম কার্যকর হেেয়ছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইউরিয়া সারের ব্যবহার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে ও চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে ডিলার পর্যায়ে ইউরিয়া সারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ১৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হলো। কৃষক পর্যায়ে ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রতি কেজি ২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার।
আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ইউরিয়ার সারের বর্তমান দাম ৮১ টাকা। ছয় টাকা বাড়লেও সরকারকে প্রতি কেজিতে ৫৯ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের ভর্তুকি ছিল মাত্র ১৫ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত চার দফা কমিয়ে অত্যন্ত স্বল্প দামে পর্যাপ্ত সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। ডিএপি সারে শতকরা ১৮ ভাগ নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের উপাদান রয়েছে। সেজন্য ডিএপির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য সরকার ডিএপির মূল্য প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করে কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে বিগত কয়েক বছরে ডিএপি সারের ব্যবহার দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে ডিএপি ব্যবহার হতো আট লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে ১৬ লাখ টন।
এছাড়া ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়ায় ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমার কথা। কিন্তু বাস্তবে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমেনি, বরং বেড়েছে। ২০১৯ সালে ইউরিয়া ব্যবহার হতো ২৫ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন।
অন্যদিকে বিগত এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় তিন থেকে চারগুণ বেড়েছে। ফলে দেশে সারে প্রদত্ত সরকারের ভর্তুকিও বেড়েছে প্রায় চারগুণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে যেখানে ভর্তুকিতে লেগেছিল সাত হাজার ৭১৭ কোটি টাকা, সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে লেগেছে ২৮ হাজার কোটি টাকা।