শেয়ার বিজ ডেস্ক: সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহৎ ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের পতনের পর ইউরোপীয় ব্যাংকগুলোর শেয়ারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি ব্যাংক খাতে উদ্ভূত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে জানা গেছে। খবর: সিএনএন।
জার্মানির ডয়েচে ব্যাংক ও ফ্রান্সের বিএনপি পারিবাসের প্রাথমিক লেনদেনে বড় পতন দেখা গেছে। তবে উভয় ব্যাংকের শেয়ারের কিছুটা লোকসান পুনরুদ্ধার করেছে। এর মধ্যে বিএনপির শেয়ারদর এখনও প্রায় ৫ শতাংশ ও ডয়েচে ব্যাংকের শেয়ারদর এখনও ৬ শতাংশের নিচে রয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, এইচএসবিসি ও বার্কলেস ব্যাংকের শেয়ারদরেও পতন দেখা গেছে।
বিবিসির বিজনেস রিপোর্টার জোনাথন জোসেফ জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ব্যাংকগুলোর শেয়ারদর পতন গতকালের এশিয়ার ব্যাংকগুলোর শেয়ারদর পতনের অনুরূপ। এমনকি সুইজারল্যান্ডের ব্যাংক ইউবিএসও লন্ডন, প্যারিস ও ফ্রাঙ্কফুর্টভিত্তিক বড় ব্যাংকগুলোর মতো শেয়ারদর পতনের মুখোমুখি হয়েছে।
সুইজারল্যান্ড সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ক্রেডিট সুইসকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যাংকটি ধারবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আসছিল। ফলে বিনিয়োগকারীরা এ ব্যাংক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন।
এর মধ্যেই প্রায় ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৩২০ কোটি ডলারের ক্রেডিট সুইস ব্যাংককে ৩২৩ কোটি ডলারে কিনে নেয় ইউবিএস। একই সঙ্গে ক্রেডিট সুইসের ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ঋণের দায়ও নিয়েছে ইউবিএস। এর মধ্য দিয়ে ১৬৭ বছরের পুরোনো ব্যাংক ক্রেডিট সুইসও অস্তিত্ব হারাল।
ইউবিএসের প্রতিদ্বন্দ্বী সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ক্রেডিট সুইস তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় দুর্বলতার কথা জানিয়েছিল। এরপর পুঁজিবাজারে ক্রেডিট সুইসের শেয়ারের ব্যাপক দরপতন শুরু হয়। গত বুধবার ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের শেয়ারের ২৪ শতাংশ দরপতন হয়। ফলে ইউরোপীয় বাজারে ব্যাংকটির সম্পদ মূল্য আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পর ইউরোপের ব্যাংকগুলোও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বৈশ্বিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাও গোলযোগের মধ্যে পড়েছে।
২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যেও নানা কারণে উভয় ব্যাংকই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেসময় ইউবিএস সুইস সরকারের কাছ থেকে বেইল আউট পেয়েছিল। অন্যদিকে, গত বছর ক্রেডিট সুইস ব্যাংককে ৭ হাজার কোটি সুইস ফ্রাঁর লোকসান গুনতে হয়ে। ২০০৮ সালের পর এটি ছিল ব্যাংকটির সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি।