শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্বে বেশিরভাগ পুঁজিবাজারে নতুন সপ্তাহ শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার। এদিন বেশিরভাগ বাজারে মূল্যসূচকে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। ইউরোপের বিনিয়োগকারীরা মন্দার আশঙ্কায় লেনদেন কমিয়ে দেয়ায় বাজারে খরা দেখা দিয়েছে বলে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গতকাল বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১ ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। রাশিয়া ও সৌদি আরব পুনরায় বছরের শেষ পর্যন্ত তেল উত্তোলনে হ্রাসের অঙ্গীকার করেছে। এ কারণে তেলের দাম বেড়েছে।
একই সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি, গাজা এখন উত্তর গাজা ও দক্ষিণ গাজা এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, বেসামরিক মানুষ এখন দক্ষিণ গাজায় যেতে পারছেন এবং তাদের সেখানেই চলে যাওয়া উচিত। এসব ঘটনার প্রভাব পড়েছে বিশ্ব পুঁজিবাজারে।
দিনের শুরুতে ইউরোপের ট্রেডিংয়ে দেখা যায়, জার্মানি ডিএএক্স ৭ পয়েন্ট হারিয়ে ১৫ হাজার ১৮০ দশমিক ০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। প্যারিসের সিএসি ৪০ সূচক শূন্য দশমিক ১ শতাংশ হারিয়ে ৭ হাজার ০৪১ দশমিক ১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ব্রিটেনের এফটিএসই ১০০ সূচক ৩ পয়েন্টের বেশি কমে ৭ হাজার ১৫ দশমিক ১৪ পয়েন্ট হয়েছে।
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াল স্ট্রিটের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজÑ উভয় সূচক শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।
সম্প্রতি কয়েকটি জরিপে দেখা গেছে, কারখানা ব্যবস্থাপকরা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। এতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম কিছুটা কমেছে, যা ইউরোপের জার্মানি, ফ্রান্স ও অন্যান্য বড় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে।
এদিকে এশিয়ার পুঁজিবাজারে উত্থান দেখা গিয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে চাঙাভাব দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে ওয়াল স্ট্রিটে উত্থানের প্রভাব পড়েছে এশিয়ার বাজারে।
গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক বৃদ্ধি পায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এতে পয়েন্ট হয় ২ হাজার ৫০২ শতাংশ ৩৭। গতকাল শর্ট সেলিংশেয়ার বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে
দক্ষিণ কোরিয়ার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সুবিধার জন্য পুনরায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। ২০২১ সালের মে মাসে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। এই পদক্ষেপের কারণে পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের উত্থান হয়েছে।
জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। এতে ৩২ হাজার ৭০৮ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে আর্থিক নীতি নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূল্যস্ফীতি কমাতে নীতি সুদহার পরিবর্তন করা হতে পারে। এছাড়া প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। তবে ব্যাংক অব জাপানের গভর্নর কাজুও উয়েদা গতকাল বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে এসব উদ্যোগ যথেষ্ট নয়।
হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১ দশমিক ৭ শতাংশ যোগ করে ১৭ হাজার ৯৬৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স বৃদ্ধি পেয়েছে শুন্য দশমিক ৯ শতাংশ। এতে তাদের পয়েন্ট বেড়ে ৩ হাজার ০৫৮ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬ হাজার ৯৯৭ দশমিক ৪০-এ অবস্থান করছে। ব্যাংককের সেট শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে।
গতকাল বাজার বন্ধের সময় ভারতের সেনসেক্স সূচক প্রায় ৫৯৪ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৬৪ হাজার ৯৫৮ দশমিক ৬৯। দেশটির আরেক পুঁজিবাজার ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফটি প্রায় শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ বা ১৮১ দশমিক ১৫ পয়েন্ট ঊর্ধ্বগামী হয়ে পৌঁছায় ১৯ হাজার ৪১১ দশমিক ৭৫-এর স্তরে।