নিজস্ব প্রতিবেদক: ভ্যাট প্রদান সহজ ও আহরিত ভ্যাট সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত করতে চালু করা হয়েছে ইএফডি (ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস) ও এসডিসি (সেলস ডেটা কন্ট্রোলার)। সারা দেশে এরই মধ্যে প্রায় ১০ হাজার মেশিন বসানো হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে আরও ১০ হাজার বসানো হবে। বিক্রেতা যাতে মেশিন চালু রাখে তা মনিটরিং করছে এনবিআর ও সংশ্লিষ্ট কমিশনারেট। তবে ইএফডি চালানকে জনপ্রিয় এবং ক্রেতাকে ভ্যাট প্রদানে উৎসাহিত করতে নগদ অর্থ পুরস্কার চালু করা হচ্ছে। এতে প্রতি মাসে লটারির মাধ্যমে ১০১ ক্রেতাকে পুরস্কার হিসেবে ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা দেয়া হবে।
প্রথম পুরস্কার হিসেবে একজন এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে একজন ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে পাঁচজনের মধ্যে প্রত্যেকে ২৫ হাজার টাকা এবং ১০ হাজার টাকা করে ৯৪ জন পুরস্কার পাবেন। গতকাল এনবিআর চেয়ারম্যানের সই করা ‘ইএফডিএমএস হতে ইস্যুকৃত চালানের ভিত্তিতে লটারির মাধ্যমে আর্থিক পুরস্কার প্রদান নীতিমালা, ২০২০’ জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে এনবিআর স্বয়ংক্রিয় এবং অনলাইনভিত্তিক কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বোর্ড এরই মধ্যে দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় অথবা জেলা শহরে অবস্থিত সংশ্লিষ্ট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কর্তৃক নির্বাচিত বিভিন্ন পণ্য ও সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে ইএফডিএমএসের আওতায় ইএফডি অথবা ক্ষেত্রবিশেষে এসডিসি অথবা পস ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। এ সব নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য ও সেবা সরবরাহের বিপরীতে ইএফডিএমএস থেকে ‘মূসক-৬.৩’ চালান ইস্যু করতে হবে।
চালান ইস্যুর ফলে সংশ্লিষ্ট পণ্য বা সেবা সরবরাহ বা বিক্রয় তথ্য ও প্রযোজ্য করের পরিমাণ বোর্ডের ইএফডিএমএসের তথ্যভাণ্ডারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাঠানো হবে। এতে একদিকে যেমন কর আহরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠিত হবে, অন্যদিকে তেমন পণ্য বা সেবার ক্রেতা কর্তৃক প্রদত্ত করের অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা মনিটরিং করা সম্ভব হবে। ইএফডিএমএস থেকে মুদ্রিত চালান প্রদান করা হলে, অর্থাৎ ক্রেতা চালান বুঝে নিলে এ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি সফল হবে। ফলে সরকারের রাজস্ব আদায় গতিশীল হবে। তাই ক্রেতা যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে চালান গ্রহণ করতে বা বুঝে নিতে আগ্রহী হয়, সেজন্য এনবিআর ইএফডিএমএস সিস্টেম থেকে ইস্যুকৃত চালানগুলোর ভিত্তিতে লটারির মাধ্যমে চালানের গ্রাহককে আর্থিক পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। নীতিমালা জারির তারিখ থেকে বলবৎ এবং সারা দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে।
পুরস্কার প্রদান পদ্ধতির বিষয়ে বলা হয়, প্রতি মাসে ইএফডিএমএস থেকে ইস্যু করা মূসক চালান লটারির কুপন হিসেবে নিয়ে লটারি অনুষ্ঠিত হবে। যে মাসে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে, তার পূর্ববর্তী মাসের প্রথম দিন থেকে শেষ কার্য দিবস পর্যন্ত ইস্যুকৃত মূসক চালানগুলো নিয়ে লটারি হবে। প্রতি মাসের ৫ তারিখ বা ছুটির দিনে লটারির ড্র হবে। তিন দিনের মধ্যে বিজয়ী চালান, কূপন নম্বর প্রকাশ করা হবে। বিজয়ীরা নির্ধারিত ফরমে এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর যেকোনো কমিশনারেট বা সার্কেলে পুরস্কার দাবির আবেদন করতে পারবেন। আবেদনে ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, চালান নম্বর, ইস্যুর তারিখ ও আবেদনকারীর সই থাকতে হবে। যাচাই শেষে পুরস্কার প্রদান করা হবে। তবে যে মাসে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে সে মাসের শেষ কার্যদিবসের মধ্যে পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে হবে। নগদ নয়, চেকের পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তির অনুকূলে চেক ইস্যু করা হবে।