ইডেনে বিরাট জয় ভারতের

ক্রীড়া প্রতিবেদক: কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে সত্যিই বিরাট জয় ভারতের। দিনটা ছিল বিরাট কোহলির। গতকাল রোববার ছিল তার জন্মদিন। সেই দিনে শতরান। সঙ্গে ভারতের বিরাট ব্যবধানে জয়। যে ম্যাচকে এ বারের বিশ্বকাপের ‘ফাইনাল’ বলা হচ্ছিল, সেই ম্যাচটাই এক পেশে ভাবে জিতে নিলেন রোহিত শর্মারা।

৩২৬ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন বিরাটরা। বাকি কাজটা করলেন রবীন্দ্র জাদেজারা। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা এলেন এবং সাজঘরে ফিরে গেলেন।

বিশ্বকাপে উড়ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের সামনে অসহায় ছিল প্রতিপক্ষ। কেবল নেদারল্যান্ডস তাদের হারিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল। আরেক ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে কষ্ট করে জিততে হয়েছে। এই দুইবারই পরে ব্যাটিং করেছে তারা। বাকি ম্যাচগুলোয় তাদের ব্যাটিং দাপট ছিল চলতি বিশ্বকাপের আলোচিত ব্যাপার। কিন্তু ভারতের কাছে ব্যাট হাতে তাদের অসহায়ত্ব ফুটে উঠল। মাত্র ৮৩ রানে অলআউট হয়ে শোচনীয় পরাজয় বরণ করতে হলো।

গতকাল টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত। তাতেই দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার চাপ বাড়িয়ে দেন তিনি। কারণ বাভুমা ভালোভাবেই জানেন তার দল রান তাড়া করতে গেলে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধেও হারতে পারে। ইডেনে সেটাই হলো। রোহিত এবং শুভমন গিল মিলে প্রথমেই মারতে শুরু করলেন। তাদের আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে বলের লাইন, লেংথ ঘেঁটে গেল মার্কো জানসেনদের। এমনই অবস্থা হলো যে, কেশব মহারাজ এবং তাবরেজ শামসি মিলে স্পিনের জাল বুনেও লাভ হলো না।

তবে এসব কিছু ছাপিয়ে গেলেন বিরাট। ইডেনে নিজের জন্মদিনে শতরান করে সচিন টেন্ডুলকারকে ছুঁয়ে ফেললেন বিরাট। এক দিনের ক্রিকেটে ৪৯টি শতরান করে ফেললেন তিনি। আর একটি শতরান করলেই টপকে যাবেন সচিনকে। তখন বিরাটই হবেন এক দিনের ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি

শতরানের মালিক। এ বারের বিশ্বকাপে আইসিসির স্লোগান ‘ইট টেকস ওয়ান ডে’ অর্থাৎ যা হওয়ার এক দিনেই হবে। সত্যি এক দিনেই হলো। কত কিছু হয়ে গেল এই একটা  রোববারে! সেটার সাক্ষী থাকল ইডেন।

বিশ্বকাপ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দলের যে প্রতিদ্ব›িদ্বতা প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তার দেখা একেবারেই মিলেনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের বিধ্বংসী বোলিংই ফিরে এলো ইডেন গার্ডেন্সে। রবীন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণিতে টালমাটাল প্রোটিয়া ব্যাটিং লাইনআপ, যারা এই বিশ্বকাপের পাঁচ ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে সবগুলোয় তিনশর বেশি রান করেছিল। কিন্তু এই আসরে তৃতীয়বার পরে ব্যাটিং করতে নেমে ফের হিমশিম খেলো তারা। ভারতের ৩২৬ রানের জবাবে হেরে গেল ২৪৩ রানে।

মোহাম্মদ সিরাজ ও মোহাম্মদ শামি নতুন বল হাতে ধাক্কা দেন। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কুইন্টন ডি কককে (৫) বোল্ড করেন সিরাজ। প্রথম পাওয়ার প্লেতে বল হাতে নেয়া জাদেজা টেম্বা বাভুমার (১১) স্টাম্প ভেঙে দেন। দশম ওভারে এইডেন মারক্রামকে (৯) লোকেশ রাহুলের ক্যাচ বানান শামি। প্রথম ১০ ওভারে ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর আঘাত জোরেশোরে লেগেছিল প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে।

আইনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলার, কেশব মহারাজ ও কাগিসো রাবাদাকে ফিরিয়ে বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইফারের কীর্তি গড়েন জাদেজা। ৯ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি। ২৮তম ওভরের প্রথম বলে লুঙ্গি এনগিডিকে (০) বোল্ড করে প্রোটিয়াদের গুটিয়ে দেন কুলদীপ যাদব।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১২১ বলে ১০১ রানে অপরাজিত থাকা বিরাট কোহলি হয়েছেন ম্যাচসেরা। ৮ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষস্থান পাকা করল ভারত। এই ম্যাচে নামার আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ ম্যাচে দ্বিতীয় হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০