ক্রীড়া ডেস্ক: টানা চতুর্থ দিন কলম্বো টেস্টের আধিপত্য ধরে রেখেছিল জিম্বাবুয়ে। শ্রীলঙ্কাকে ৩৮৮ রানের লক্ষ্য দিয়ে জয়ের স্বপ্নও বুনছিল সফরকারীরা। কিন্তু তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ালো নিরোশান ডিকভেলা ও আসেলা গুনারতেœর ষষ্ঠ উইকেট জুটি। তাদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়েই ৪ উইকেটের জয় ছিনিয়ে নিয়েছে লঙ্কানরা।
এর আগে এশিয়ার মাটিতে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ছিল ৩৮৭। ২০০৮ সালে চেন্নাইয়ে ভারত জিতেছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে রান তাড়ার সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের, ২০১৫ সালে। সেবার ৩৭৭ রান তাড়া করে জিতেছিল পাকরা। দুটি রেকর্ডই গতকাল ভেঙে দিল শ্রীলঙ্কা। সব মিলিয়ে এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।
অথচ কলম্বো টেস্টে এক সময় জয়ের সুবাস পাচ্ছিলো জিম্বাবুয়ে। চতুর্থ দিন শেষেও সফরকারীরা ছিল ভালো অবস্থানে। কিন্তু টেস্টের পঞ্চম দিনে তৃতীয় আম্পায়ার শামসুদ্দিনের এক সিদ্ধান্তে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে সফরকারীরা। ৩৭ রানে ব্যাট করার সময় সিকান্দার রাজার বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েছিলেন ডিকভেলা। রিপ্লেতে দেখা যায়, দাগের ওপরে ছিল লঙ্কান ব্যাটসম্যানের পা। মানে পরিষ্কার আউট! কিন্তু ভারতীয় আম্পায়ার শামসুদ্দিন অবিশ্বাস্যভাবে তাকে নটআউট দিয়ে বসেন। শেষ পর্যন্ত সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় সফরকারীদের জন্য। আর এ সুযোগটি ধরে নিয়ে জয়ের অভীষ্ট লক্ষ্যে ছুটতে থাকে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠ উইকেটে ডিকভেলা (৮১) ও গুনারতেœর (৮০*) ব্যাটে ভর করে ইতিহাস গড়ে টেস্ট জিতে নেয় লঙ্কানরা।
এর আগে ২০৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা শ্রীলঙ্কা জয়ের লক্ষ্যে বেশ বিপদেই পড়েছিল। প্রথম সেশনে শ্রীলঙ্কার ৩ উইকেট তুলে নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যেতে পারতো জিম্বাবুয়ে। শেষ দুই সেশনে ৪টি উইকেট হলেই হতো তাদের। কিন্তু তা হলো না। উল্টো লাঞ্চের পর পঞ্চম ওভারে ডিকভেলাকে আরেকটি সুযোগ দিলেন উইকেটকিপার চাকাভা, ক্যাচ ফেলে। শেষ পর্যন্ত ডিকভেলা ৮১ রানে ফেরেন সাজঘরে। কিন্তু এক প্রান্তে আগলে ছিলেন গুনারতেœ। জয়ের জন্য বাকি কাজটা তিরিন সারেন দিলরুয়ান পেরেরাকে নিয়ে।
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিয়েছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক গ্রাহেম ক্রেমার। আগের ইনিংসের ৫ উইকেটের পর এবার নিয়েছেন ৪ উইকেট। কিন্তু সতীর্থদের বাজে ফিল্ডিং আর ক্যাচ মিসের মহড়ায় শেষ পর্যন্ত কাক্সিক্ষত জয় ছিনিয়ে আনতে পারেননি তিনি। সঙ্গে তো তৃতীয় আম্পায়ারের বাজে একটি সিদ্ধান্ত ছিলই। সব মিলিয়ে কিছুটা আফসোস করতেই পারে সফরকারীরা।