Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 6:52 pm

ইনডেমনিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করার পরিকল্পনা ছিল: আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করার জন্য করা হয়নি, এটা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার পরিকল্পনার অংশ ছিল।’ গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সিনিয়র কৃষিবিদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। কেআইবির ঢাকা মেট্রোপলিটন শাখা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

আনিসুল হক বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল যে, জাতির জনককে হত্যা করে বিচার বন্ধ করে দিয়েছি। তোমাদের হত্যা করলে তার বিচার হবে না। এসব ধাপ্পাবাজি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সাহস রুদ্ধ করা যাবে না। সেটা ১৯৯৬ সালে প্রমাণিত হয়েছে; যদিও অনেক সময় লেগেছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে আইনসম্মতভাবে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করেন। এই অধ্যাদেশের মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আদালতে কোনো মামলা করা যাবে না। শুধু তাই নয়, আদালতও কোনো দিন, কোনো সময়, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না। তার মানে হচ্ছে, জনগণ বিচার পাওয়ার জন্য আদালতে যেতে পারবে না, তাদের বিচার পাওয়ার শেষ আশ্রয়স্থলে যেতে পারবে না। এটা হলো জনগণের ক্ষমতা হরণ করা। আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়েও এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের একটি অনুচ্ছেদে বলা ছিল, যারা এই আইনের দ্বারা প্রটেকটেড হবেন, তাদের একটি সার্টিফিকেট লাগবে; যা রাষ্ট্রপতি দেবেন। তার অর্থ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করা হয়েছিল।’ আনিসুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর একটি জিডিও করা হয়নি, বিচার তো দূরের কথা। আমরা তখন অনেক হত্যাকাণ্ড দেখেছি, তার বিচার হয়নি। অনেক মানুষকে মরে যেতে দেখেছি, তার বিচার হয়নি। জেল হত্যাকাণ্ডের একটি এফআইআর হয়েছিল, তা আর আলোর মুখ দেখেনি।’

তিনি বলেন, দেশ গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী একজন আর্কিটেক্ট। তার কারণ হলো, তার প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ ২০১৫ সালে নিন্ম মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যুক্ত হবে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ২০৩১ সালের মধ্যে দেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদায় নিয়ে যাওয়া এবং ২০৪১ সালে দারিদ্র্যের অবসান করে উচ্চ আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। এমন কোনো পরিকল্পনা বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ নেয়নি। তিনি একজন আর্কিটেক্ট।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. লিয়াকত আলী জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, কেআইবির মহাসচিব মো. খায়রুল আলম (প্রিনস), আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. তাসদিকুর রহমান সনেট প্রমুখ বক্তৃতা করেন।