Print Date & Time : 2 July 2025 Wednesday 1:49 am

ইন্টারনেটে ভ্যাট ও আইটি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইন্টারনেট ব্যবহার আরও সহজলভ্য করার মাধ্যমে সব পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার এবং ইন্টারনেট মডেম, ফেসকার্ড, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সুইচ, হাব, রাউটার, সার্ভার, ব্যাটারিসহ ইন্টারনেট যন্ত্রাংশ আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। একই সঙ্গে দেশীয়ভাবে মোবাইল ফোন উৎপাদনে উৎসাহ প্রদানের অংশ হিসেবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি প্রণোদনামূলক শুল্ক-কর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ)।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে গতকাল এনবিআরের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় ইলেক্ট্রনিকস, ইলেক্ট্রিক্যাল, কম্পিউটার, আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাব দেওয়া হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ইন্টারনেট সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্য নেটওয়ার্ক যন্ত্রাংশের প্রয়োজন। নেটওয়ার্ক যন্ত্রপাতির সহজলভ্যতা ও সুলভমূল্য তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নে প্রধান হাতিয়ার।
ইন্টারনেট মডেম, ইথারনেট ইন্টারফেসকার্ড, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সুইচ, হাব, রাউটার সার্ভার, ব্যাটারিসহ সব ইন্টারনেট যন্ত্রাংশে বর্তমানে উচ্চ হারে করারোপ রয়েছে। এসব পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক, অগ্রিম আয়কর ও মূসক প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন তিনি।
তিনি ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনাকারীদের আয় করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করেন। তিনি আরও বলেন, সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধা দিয়েছে। এর মাধ্যমে বিগত কয়েক বছরে এ খাতে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়টা অত্যন্ত কম। এছাড়া প্রতি বছর বাজেটে নতুন কিছু সংযোজন হওয়ায় অনেকেই জটিলতায় পড়ছে। এ খাতে ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দিলে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। তিনি সব ধরনের ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বিএমপিআইএ-এর সভাপতি রুহুল আমিন স্মার্টফোন আমদানিতে কয়েক বছরের জন্য শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব করে বলেন, গত অর্থবছর স্মার্টফোনের আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ফলে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ৩৩ শতাংশ থেকে এক শতাংশে নেমে এসেছে। দেশে ফোরজি চালু হলেও অধিক শুল্কের কারণে ফোরজি ফোন আমদানি হচ্ছে না। দেশে সাতটি কোম্পানি স্থানীয়ভাবে ফোন উৎপাদনের জন্য প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। স্থানীয় বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে এ খাতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি শুল্ককর-প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেন তিনি।
সভায় কম্পিউটার পণ্যসামগ্রীর খুচরা ও সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি ২০২১ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখা, কম্পিউটার পণ্য আমদানির সময় প্রযোজ্য বিভিন্ন ধরনের ভ্যাটসহ ৩০ শতাংশ কর কমিয়ে নিয়ে আনার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশে অনেকেই শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছে জেনে ভালো লাগছে। আমরাও চাই দেশীয় শিল্পের বিকাশ ঘটুক। সে ক্ষেত্রে রাজস্ব ছাড় দিয়ে হলেও উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি রফতানি বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা দেব।
চলতি অর্থবছর রাজস্ব ঘাটতি ৫০ হাজার কোটি টাকা হবে-সিপিডির এমন বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে চেয়ারম্যান বলেন, কিছু কিছু থিঙ্ক ট্যাঙ্ক রাজস্ব ঘাটতি ৫০ হাজার কোটি টাকা হবে বলে মন্তব্য করেছে। তবে ঘাটতি এতটা হবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস। এখনও তিন মাস সময় আছে। শেষ সময়ে রাজস্ব আদায় বেশি হয়। সে হিসেবে এ সময় রাজস্ব আদায় বাড়বে। প্রতি বছরই বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাও কমে। এবারও তাই হবে। আমরা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব।