নিজস্ব প্রতিবেদক: মন্ত্রিত্ব হারানো মুরাদ হাসানের ‘কুরুচিপূর্ণ, অবমাননাকর ও অশালীন’ মন্তব্যের মোট ৩৮৭টি অডিও-ভিডিওর ফেসবুক ও ইউটিউব লিংক চিহ্নিত করার কথা আদালতকে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
এর মধ্যে ফেসবুকের লিংক ২৭২টি ও ইউটিউবের ১১৫টি। ফেসবুকের ১৫টি এবং ইউটিউবের দুটি লিংক এরই মধ্যে অপসারণ করেছে কমিশন।
এ ছাড়া মুরাদ হাসানের ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের আরও ২০০ লিংক চিহ্নিত করেছে ফেসবুক, যা বন্ধ করার প্রক্রিয়ায় তারা নিজেরাই যাচাই-বাছাই শুরু করছে বলে বিটিআরসির ভাষ্য।
কমিশনের আইনজীবী খন্দকার রেজা ই রাকিব গতকাল বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য দেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের মৌখিক আরজিতে মঙ্গলবার এ আদালত ইউটিউব-ফেসবুসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে মুরাদ হাসানের ‘কুরুচিপূর্ণ, অবমাননাকর ও অশালীন’ মন্তব্যের অডিও-ভিডিও অপসারণের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে।
সেইসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা বুধবার আদালতকে জানাতে বলা হয়েছিল। সে নির্দেশনা অনুযায়ী বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা ই রাকিব গতকাল আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারও এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আইনজীবী রেজা ই রাকিব আদালতে বলেন, আদালতের আদেশ নজরে আসার পরই বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার নাসিমের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ শুরু করেছে। ওই কমিটি ফেসবুক ও ইউটিউবের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম তখন বলেন, বিটিআরসির একটি ভিজিলেন্স (পরিদর্শক) টিম থাকা উচিত, যাতে বিষয়গুলো নজরদারিতে রেখে প্রয়োজনে নিজেরাই ব্যবস্থা নিতে পারে।
রেজা ই রাকিব বলেন, বিটিআরসি এ কাজটি একা করতে পারবে না। সেজন্য একটি রেজুলেশনের খসড়া করা হয়েছে। হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চে তা দাখিলও করা হয়েছে।
‘এটি যখন চূড়ান্ত হবে, তখন এ ধরনের অডিও-ভিডিওর লিংক শনাক্ত করতে সুবিধা হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে ‘নারীবিদ্বেষী’ মন্তব্য করে সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের সমালোচনায় পড়েন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান।
এরপর একটি টেলিফোন আলাপের অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একজন অভিনেত্রীর সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলতে এবং হুমকি দিতে শোনা যায় এক ব্যক্তিকে। বলা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি মুরাদ হাসান।
এ অডিও কেলেঙ্কারির জেরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মঙ্গলবার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। জামালপুর আওয়ামী লীগের সম্পাদক পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
চিকিৎসাশাস্ত্রের ডিগ্রিধারী মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের এমপি। আওয়ামী লীগ তাকে দল থেকে বহিষ্কার করলে তার সংসদ সদস্য পদ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।