নিজস্ব প্রতিবেদক: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের (এনপিএসবি) আওতায় ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের তহবিল স্থানান্তরের (আইবিএফটি) সীমা বাড়ানো হয়েছে। ব্যক্তি গ্রাহকের দৈনিক লেনদেনের সীমা আড়াইগুণ ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকের পাঁচ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আর ব্যক্তির একক লেনদেনের সীমা দ্বিগুণ ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকের ক্ষেত্রে ৪ গুণ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া উভয়ের ক্ষেত্রে দৈনিক লেনদেনের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এবার ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকের সীমা পৃথক করা হলো। আগে উভয় গ্রাহকের ক্ষেত্রে একই সীমা ছিল।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, এনবিএসবির আওতাধীন ব্যাংকগুলোর তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর আন্তঃব্যাংক সেবা ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় এবং লেনদেন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারনেট ব্যাংকিং তহবিল স্থানান্তরে ঊর্ধ্বসীমা পুনর্নির্ধারণ করা হলো।
আন্তঃব্যাংক এটিএম, পয়েন্ট অব সেলস (পস), ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ে চার ধরনের সেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ বা এনপিএসবি চালু হয়। শুরুতে এনপিএসবির আওতায় শুধু এটিএম ও পস সেবা দেওয়া হচ্ছিল। তবে ২০১৭ সালের নভেম্বরে এনপিএসবির মাধ্যমে আন্তঃব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং তহবিল স্থানান্তর কার্যক্রমের অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই সময় প্রাথমিকভাবে ৬টি ব্যাংকের মধ্যে আন্তঃব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। বর্তমানে এনপিএসবির মাধ্যমে আন্তঃব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং তহবিল স্থানান্তর কার্যক্রমে মোট ২৪টি ব্যাংক যুক্ত হয়েছে।
এতদিন এনপিএসবির মাধ্যমে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানিক উভয়ের ক্ষেত্রে আন্তঃব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং তহবিল স্থানান্তর দৈনিক লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা ছিল মাত্র ২ লাখ টাকা। প্রতিবার লেনদেন করা যেত সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া দৈনিক মোট পাঁচবার লেনদেন করার সুযোগ পেতেন ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয় গ্রাহক। নতুন সার্কুলারে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকের লেনদেন সীমা পৃথকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
সার্কুলার অনুযায়ী, এখন থেকে এনপিএসবির মাধ্যমে ব্যক্তি গ্রাহকদের আন্তঃব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং তহবিল স্থানান্তর দৈনিক লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা হবে ৫ লাখ টাকা। প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকের ক্ষেত্রে এই সীমা ১০ লাখ টাকা। প্রতিবার লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা ব্যক্তি গ্রাহকের ক্ষেত্রে হবে ১ লাখ টাকা। আর প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকের ক্ষেত্রে প্রতিবার লেনদেনের এই সীমা ২ লাখ টাকা। ব্যক্তি গ্রাহকরা দৈনিক মোট ১০ বার এবং প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকরা ২০ বার লেনদেন করার সুযোগ পাবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ফান্ড ট্রান্সফার সুবিধার আওতায় আন্তঃব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের লেনদেন করা যাবে। এ সেবার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ডের বিল প্রদান, ডিপিএসের মাসিক কিস্তি জমা, ঋণের মাসিক কিস্তি জমা, বিমার প্রিমিয়াম জমা এবং বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) অর্থ পরিশোধ করা যাবে। এ ধরনের লেনদেন অধিকতর সহজ, সাশ্রয়ী ও দ্রুততর সম্পন্ন করা যায়।