বর্তমান যুগে ইন্টারনেট সেবা মানুষের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি অনুষঙ্গ। এটি ছাড়া মানুষের দৈনন্দ্বিন জীবন একদম অচল। এমনটি একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নও এখন অনেকাংশে নির্ভর করে ইন্টারনেট সেবার মানের ওপর। সে কারণে দেশে ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য করা আবশ্যক। কিন্তু অব্যাহতভাবে ইন্টারনেটের দাম বাড়ানো হচ্ছে। অথচ এর বিপরীতে সেবার মানোন্নয়নে তেমন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে ইন্টারনেট সেবার মানোন্নয়ন আবশ্যক বলে মনে করি।
দৈনিক শেয়ার বিজে গতকাল ‘প্রতি জিবি মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বেড়েছে ২০ টাকা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, গ্রামীণফোনের ইন্টারনেটের দাম প্রতি জিবিতে বেড়েছে ২১ টাকা। আর রবি ও বাংলালিংকের দাম বেড়েছে জিবিপ্রতি ২০ টাকা। এতে এ তিন কোম্পানির সিম দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের খরচ ৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর কোম্পানি টেলিটকের ইন্টারনেটের দাম।
ইন্টারনেটের গতি নিয়ে নানা সময়ই গণ্যমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, ইন্টারনেটের গতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ব পরিমণ্ডলে একদম তলানিতে রয়েছে। মোবাইল ডেটার দাম অন্যান্য অনেক দেশের সমপর্যায়ে থাকলেও সেবার মানের দিক দিয়ে দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থা তার ধারেকাছেও নেই। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে আবশ্যিকভাবে ইন্টারনেট সেবার মানোন্নয়ন ঘটাতে হবে।
বাংলাদেশ ২০৩১ সালে উচ্চমধ্যম আয় এবং ২০৪১ সালে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব মাইলস্টোন অর্জন করতে হলে বাংলদেশকে অবশ্যই প্রযুক্তিতে উন্নত হতে হবে। প্রযুক্তিগত বিষয়ে পিছিয়ে থেকে উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখার কোনো সুযোগ নেই। আর প্রযুক্তিতে এগোতে হলে অবশ্যই ইন্টারনেট সেবার মানোন্নয়ন ঘটাতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে বলে মনে করি।
দেশে মোবাইল অপারেটরগুলোর সেবার মান নিয়ে শুরু থেকেই নানা প্রশ্ন রয়েছে। এমনটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) সেবার মান নিয়ে হাজারও অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে সেসব অভিযোগ কতটা নিষ্পত্তি করা হয়েছে সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। সেবার মান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রাহকদের নানা অভিযোগ পাওয়া যায়। দেশের সব মোবাইল সেলফোন গ্রাহকই কোনোভাবে সেবা পেতে বিড়ম্বনার শিকার হয়ে থাকেন। কিন্তু অধিকাংশই যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেন না নানা কারণে। তাই তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব বিষয় তুলে ধরেন। এমনকি অপারেটরগুলোর ফেসবুক পেজে গেলে হাজারো অভিযোগ পাওয়া যাবে ইন্টারনেট সেবার নিম্ন মানের বিষয়ে। কাজেই ইন্টারনেট সেবার মানোন্নয়নের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে বলে মনে করি। সংশ্লিষ্ট মহল এ বিষয়ে উদ্যোগী হবে বলেই প্রত্যাশা।