Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 5:19 am

ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধে সহিংসতায় ক্ষমা চাইল নেদারল্যান্ডস

শেয়ার বিজ ডেস্ক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সাবেক উপনিবেশ ইন্দোনেশিয়ার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে নেদারল্যান্ডস যে সহিংসতা চালিয়েছিল, ঐতিহাসিক পর্যালোচনায় তার প্রমাণ পাওয়ায় পূর্ব এশিয়ার দেশটির জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী আমস্টারডামে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন। খবর: রয়টার্স।

ওই পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রাম চলার সময় ১৯৪৫ থেকে ১৯৪৯ সালের মধ্যে ডাচ সামরিক বাহিনী পরিকল্পিতভাবে অতিরিক্ত ও অনৈতিক সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছিল এবং সে সময়কার নেদারল্যান্ডস সরকার ও ডাচ সমাজের ব্যক্তিরা বিষয়গুলো উপেক্ষা করেছিলেন। এ ঐতিহাসিক তথ্য মেনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এ লজ্জাজনক বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। ডাচ সরকারের পক্ষ থেকে আজ আমি ইন্দোনেশিয়ার জনগণের প্রতি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

২০১৭ সালে ডাচ সরকারের অর্থায়নে এ গবেষণা শুরু হয়। ইতিহাস পর্যালোচনার এ গবেষণার ফল বৃহস্পতিবার আমস্টারডামে প্রকাশ করা হয়। দুই দেশের ২৪ জন বিশেষজ্ঞ ও প্রতিনিধিরা এ গবেষণা কাজে অংশ নেন।

গবেষণায় অংশ নেয়া নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর মিলিটারি হিস্টোরির ইতিহাসবিদ বেন শোয়েনমাকের বলেন, ডাচ সামরিক বাহিনীর ওই সময় নিয়মিতভাবে যে মাত্রায় নির্যাতন চালিয়েছে, তাকে এখন ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে বিবেচনা করা যায়।

ওই যুদ্ধে ইন্দোনেশিয়ার প্রায় এক লাখ মানুষ নিহত হন। ১৯৬৯ সালে ডাচ সরকার এ উপসংহারে পৌঁছায় যে, তাদের সামরিক বাহিনী ওই যুদ্ধের সময় সামগ্রিকভাবে যা করেছিল, তা ‘ঠিকই ছিল’। তবে ২০০৫ সালে তারা স্বীকার করে, ওই সময় তারা ‘ইতিহাসের ভুল জায়গায়’ অবস্থান নিয়েছিল।

২০২০ সালের মার্চে নেদারল্যান্ডসের রাজা ভিলেম-আলেকজান্ডার ডাচদের সহিংসতার জন্য আকস্মিকভাবেই দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপর ডাচ সরকারের পক্ষ থেকেও ১৯৪৭ সালে ইন্দোনেশিয়ার রাগাওয়েদে গ্রামে গণহত্যায় নিহতদের সন্তানদের জন্য পাঁচ হাজার ইউরো করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওই ক্ষতিপূরণের জন্য যোগাযোগ করার সুযোগ এখনও আছে। তবে ডাচ সেনারা সে সময় যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী কি না, সে বিষয়ে সরাসরি কোনো স্বীকারোক্তি আসেনি রুটের তরফ থেকে।