নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আলোচিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে ঢাকায় নতুন একটি মামলা হয়েছে। গতকাল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক নারী মামলার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক দেবদাস চন্দ্র অধিকারী ধানমন্ডি থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান।
রাসেল কারাগারে আর শামীমা আট মাস কারাভোগের পর ৬ এপ্রিল থেকে জামিনে রয়েছেন। মামলার আরজিতে বলা হয়, ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ২৬ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকার বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করেন। পরে ওই টাকা ইভ্যালির অ্যাকাউন্টে তিনি জমাও করেন। কিন্তু অর্ডার করা সেসব পণ্য আর পাননি তিনি।
পণ্য না দিতে পারায় ইভ্যালি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পাঁচটি চেকের মাধ্যমে বাদীকে ওই টাকা দেয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর হেমায়েতপুর শাখায় ইউনাইটেড ব্যাংকে জমা দেয়ার পর চারটি এবং ১০ নভেম্বর আরেকটি চেক ‘ডিসঅনার’ হয়। জান্নাতুল তখন বিষয়টি ইভ্যালিকে জানালে মৌখিকভাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিন্তু গত ছয় মাসেও তা করেনি বলে আদালতে মামলার আবেদনে উল্লেখ করেন ওই গ্রাহক।
গাড়ি, মোটরসাইকেল, গৃহস্থালির আসবাবপত্র, স্মার্ট টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিনসহ বিভিন্ন পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের নজরে এসেছিল ইভ্যালি। তাদের চমকদার অফারের ‘প্রলোভনে’ অনেকেই বিপুল অঙ্কের টাকা অগ্রিম দিয়ে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন; পরে বেশি দামে বিক্রি করে ভালো লাভ করার আশায় বলে সংবাদমাধ্যমে খবর বের হয়। কিন্তু মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও তাদের অনেকে পণ্য বুঝে পাননি; ইভ্যালি অগ্রিম হিসেবে নেয়া টাকাও ফেরত দেয়নি।
এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ইভ্যালিসহ আরও বেশ কিছু ই-কমার্স কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিক্ষোভে নামেন গ্রাহকরা। তখন বেশ কিছু মামলাও হয়।
এরকমই এক গ্রাহকের করা মামলায় গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এরপর থেকে এ দম্পতির বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়েছে।