ক্রীড়া প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নামলেই জ্বলে ওঠে ইমরুল কায়েসের ব্যাট। গতকালও ঠিক তা-ই হয়েছে। সিলেট থান্ডারের বিপক্ষে যখন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স বিপদের মুখে, তখনই ঝড় তুলেন এ বাঁহাতি। এক প্রান্ত আগলে রেখে বন্দরনগরীর দলটিকে দেখান জয়ের পথ। শেষ পর্যন্ত তার নৈপুণ্যে এবারের নতুন আঙ্গিকের বিপিএলে শুভসূচনা করেছে রায়াদ এমরিতের দল।
ইমরুলের ৩৮ বলে ৬১ রানের ইনিংসে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম জিতেছে ৫ উইকেটে। এর আগে টস জিতে আগে বল হাতে শুরুটা ভালো হলেও মোহাম্মদ মিথুনের তাণ্ডবে (৪৮ বলে ৮৪) চিন্তায় পড়েছিল চট্টগ্রাম। তারপরও রুবেল হোসেনের (২/২৭) নৈপুণ্যে প্রতিপক্ষের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ১৬২ রানে আটকে রাখে বন্দরনগরীর দলটি। পরে রান তাড়ায় ৬ বল হাতে রেখে ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় এমরিতের দল।
নিয়োমিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চোটের কারণে নেই। এদিকে ক্রিস গেইল এখনও দলের সঙ্গে যোগ দেননি। তাই গতকাল বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার আগে কিছুটা অস্বস্তিতে ভুগছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। তবে বল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেটা ঠিক বুঝতে দেয়নি দলটির খেলোয়াড়রা। তাই তো ৬১ রানেই মধ্যেই সিলেটের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে হুঙ্কার দিয়েছিল বন্দরনগরীর দলটি। তবে পরে মোহাম্মদ মিথুনের ঝড়ের কাছে পড়ে সেটা ধরে রাখতে পারেনি তারা। চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে মিথুন গড়েন ৯৬ রানের জুটি। এর মধ্যেই এবারের বিপিএলে ৩০ বলে ৫টি ছয়ে এবারের বিপিএলে প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মিথুন। শেষ পর্যন্ত ৪৮ বলে ৪টি চার ও ৫টি ছয়ে এ ডানহাতি অপরাজিত থাকেন ৮৪ রানে। অন্যদিকে মোসাদ্দেক ৩৫ বলে ১টি চার-ছয়ে ২৯ রান করে ফিরেন। তারপরও লড়াইয়ের জন্য বড় পুঁজিই পায় দলটি।
জবাব দিতে নেমে গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে শুরুতেই জুনায়েদ সিদ্দিকী ও নাসির হোসেনকে হারিয়ে বিপদে পড়ে চট্টগ্রাম। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের ৫ম ও ৬ষ্ঠ বলে ওই দুই ব্যাটসম্যানকে সাজঘরের পথ দেখান নাজমুল হোসেন অপু। বেশিক্ষণ টেকেননি আবিস্কা ফার্নান্দোও (৩৩)। তবে তৃতীয় উইকেটে ২২ গজে নেমে শুরুতে ইমরুল কায়েস দলের বিপর্যয় সামাল দেন। এরপর ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়ান। এরই একপর্যায়ে এ বাঁহাতি চাদউইক ওয়ালটনের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে গড়ে তোলেন ৩২ বলে ৫০ রানের জুটি। এর কিছুক্ষণ পরই ইমরুল মাত্র ২৯ বলে ২ চার ও ৪টি ছয়ে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। তখন থেকেই জয়ের সুবাস পেতে শুরু করেছিল চট্টগ্রাম। শেষ পর্যন্ত ১৮তম ওভারে করা ইবাদত হোসেন ৪র্থ বলটি সীমানার ওপর দিয়ে মাততে যেয়ে ধরা পড়ে সান্টোকির হাতে। ফেরার আগে এ বাঁহাতি করেন ৩৮ বলে ৫ ছয় ও ২ চারে ৬১ রান।
ইমরুল ফিরলেও চট্টগ্রামের জয়ের বাকি কাজটি খুব সহজেই সারেন ওয়ালটন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৩০ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৪৯ রানে। অন্য প্রান্তে নুরুল হোসেন সোহান ৪ বলে ৫ করে অপরাজিত ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ১৬২/৪ (রনি ৫, চার্লস ৩৫, মিঠুন ৮৪*, মেন্ডিস ৪, মোসাদ্দেক ২৯, মিলন ১*; নাসুম ৪-০-৩৪-১, রুবেল ৪-০-২৭-২, এমরিট ৪-০-৩৮-১, মুক্তার ৩-০-২২-০, নাসির ৪-০-২২-০, বার্ল ১-০-১৫-০)।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৯ ওভারে ১৬৩/৫ (ফার্নান্দো ৩৬, জুনায়েদ ৪, নাসির ০, ইমরুল ৬১, বার্ল ৩, ওয়ালটন ৪৯*, সোহান ৫*; সোহাগ ৪-০-৩৬-০, সান্টোকি ৪-০-৩৪-১, নাজমুল অপু ৩-০-২৩-২, ইবাদত ৪-০-৩৩-১, মোসাদ্দেক ১-০-৯-১, নাভিন ৩-০-২৭-০)।
ফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: ইমরুল কায়েস
মন্তব্য