নিজস্ব প্রতিবেদক: অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ইয়াস আজ দুপুর নাগাদ উত্তর ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। অতিক্রমের সময় দেশের ১৪ জেলাসহ আশপাশের এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে আজ পূর্ণিমার কারণে জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে দুই থেকে চার ফুট বেশি হতে পারে। ফলে উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, ইয়াসের প্রভাব এরই মধ্যে দেশের প্রায় সব এলাকায় পড়তে শুরু করেছে। এতে বৃষ্টি আরও বাড়বে। আজ দুপুরে এটি ভারতের উপকূল অতিক্রম করতে পারে, যদি ঝড়টি কোনো বাধা না পায়। বাধা পেলে গতি ঘুরিয়ে কোথায় যাবে, তা কেউ বলতে পারে না। এর আগে সুন্দরবনে বাধা পেয়ে ঢাকার পাশ দিয়ে আসাম পর্যন্ত গিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় সিডর।
তিনি বলেন, আজ উপকূল অতিক্রমের সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকাগুলোয় ভারী বৃষ্টি আর দমকা হাওয়া বইবে। একই সঙ্গে জোয়ারের পানি বেশি হবে। তিনি জানান, আজ ও বৃহস্পতিবার আবহাওয়া এমনই থাকবে। থেমে থেমে বৃষ্টি আর দমকা হাওয়া চলবে। শুক্রবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হবে।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও একই সঙ্গে পূর্ণিমা হওয়ায় স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে দুই থেকে চার ফুট বেশি উঁচু জোয়ার আসতে পারে। ফলে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
ঝড়ের গতিপথের বিষয়ে ব্র্যাকের হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রামের পরিচালক সাজেদুল হাসান মনে করেন, ঘূর্ণিঝড়টি কোনো কারণে গতিপথ পরিবর্তন করলে সুন্দরবন, মানুষ ও অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি কমে আসবে। এটা একেবারে সুন্দরবনে আঘাত হানলে বনের ক্ষতি হবে। নানা প্রজাতির
জীবজন্তুর ওপর আঘাত হানতে পারে। কিন্তু আম্পানের মতো আরেকটু ডানদিকে ঘেঁষে খুলনা বা সাতক্ষীরা অঞ্চলে গেলে এটি জনপদের ওপর আঘাত হানবে।
সাজেদুল হাসান বলেন, এবারে যেটি বলা হচ্ছে, ‘ইয়াস’ যখন আঘাত হানবে, তখন পূর্ণিমা থাকবে। আর পূর্ণিমা থাকলে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস কয়েক ফুট বাড়বে। সেখানে একটা ঝুঁকি আছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস যখন ভারতের উপকূল অতিক্রম করবে, সে সময় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলো এবং তার আশপাশের দ্বীপ ও চরগুলোয় দমকা হাওয়াসহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।