শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি দেশটির একজন স্বল্পপরিচিত মধ্যপন্থি রাজনীতিবিদ। খবর: আল জাজিরা।
পেজশেকিয়ান ছিলেন ইরানের সংস্কারবাদী আইনপ্রণেতা। পেশায় হƒদ্রোগ-বিষয়ক শল্যবিদ।
তার এ জয় সামাজিক স্বাধীনতা এবং আরও বাস্তবধর্মী পররাষ্ট্রনীতি-প্রত্যাশী ইরানের কোটি কোটি মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।
আশির দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধে পেজেশকিয়ান অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। তার দায়িত্ব ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে চিকিৎসাকর্মীদের মোতায়েন করা।
পেজেশকিয়ান প্রেসিডেন্ট খাতামির শাসনামলে ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৪ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও এক সন্তান হারান তিনি। পরে আর বিয়ে করেননি। দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে আছেন তিনি।
পেজেশকিয়ান গত শুক্রবার ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটে কট্টরপন্থি প্রার্থী সাইদ জালিলিকে হারিয়েছেন। জয়ী হওয়ায় তাকে বিশ্বশক্তিগুলোর স্বাগত জানানোর কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, তেহরানের দ্রæত বিকাশমান পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের তীব্র টানাপড়েনে একটা শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে পারেন তিনি।
পেজেশকিয়ান এমন লোকদের সমর্থন পেয়েছেন, যারা মূলত শহুরে মধ্যবিত্ত ও তরুণ জনগোষ্ঠীর বলে মনে করা হচ্ছে। ইসলামি ভাবধারার বিপরীত কোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কয়েক বছর ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো অভিযানে ব্যাপকভাবে আশাহত হয়েছেন এ শ্রেণির ভোটাররা।
৬৯ বছর বয়সী পেজেশকিয়ান ইরানকে বাস্তবধর্মী পররাষ্ট্রনীতির দিকে এগিয়ে নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি অঙ্গীকার করেছেন, ২০১৫ সালে সই করা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে চলা আলোচনা স্থবির হয়ে পড়ায় সৃষ্ট উত্তেজনা হ্রাস করা হবে। এবং সামাজিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক বহুত্ববাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার।
ইরানের ধর্মতাত্তি¡ক শাসনব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল পেজেশকিয়ান। নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতাধর কর্তৃত্ব ও ধর্মীয় শাসকদের সঙ্গে বিবাদে জড়ানোর কোনো ইচ্ছা তার নেই। এরই মধ্যে বিভিন্ন টেলিভিশন বিতর্ক ও সাক্ষাৎকারে খামেনির নীতিকে চ্যালেঞ্জ না জানানোর অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
ইরানে ধর্মীয় নেতা ও প্রজাতান্ত্রিক শাসনÑএ দ্বৈত ব্যবস্থায় দেশটির পরমাণু কর্মসূচি বা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তেহরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করার বিষয়ে বড় নীতিগত বদল আনার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই। কেননা এগুলো শীর্ষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় বিষয় হিসেবে ঘোষণা করেছেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
