শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞা মানবে না চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু ক্যাং গত মঙ্গলবার এ কথা জানান দিয়েছেন। বিশেষ করে ইরানের তেল বিক্রির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বেইজিং মানবে না বলে জানান তিনি। খবর পার্স টুডে।
লু ক্যাং বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের আরোপিত একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছে চীন। ইরানের সঙ্গে চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তেহরানের সঙ্গে সহযোগিতা ও লেনদেন চালিয়ে যাবে বেইজিং।
এর আগে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক মুখপাত্র হুয়া চুনিং ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে বলেছিলেন, পরমাণু সমঝোতার ভিত্তিতে তেহরানের সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা চালিয়ে যাবে বেইজিং।
মার্কিন প্রশাসন গত মে মাসে ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে তেহরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল করা হবে।
ওয়াশিংটন ইরানবিরোধী নিষেধাজ্ঞায় শামিল হতে ইউরোপীয় দেশগুলোসহ বিশ্বের সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, তেহরানের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী দেশগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
গত সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি পরিকল্পনা পরিচালক ব্রায়ান হুক বলেন, ইরান কোনো স্বাভাবিক রাষ্ট্র নয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে দেশটিকে অবশ্যই ১২ দফা শর্ত মানতে হবে। স্বাভাবিক কোনো রাষ্ট্র অন্য দেশকে সন্ত্রাসায়িত করে না, ক্ষেপাণস্ত্র বৃদ্ধি করে না এবং নিজেদের জনগণকে নিঃস্ব করে না। যুক্তরাষ্ট্রের এ নীতি ইরানের শাসক পরিবর্তনের জন্য নয়। এটা ইরানের শাসকদের আচরণ পরিবর্তন করানোর জন্য। ইরানের জনগণ সত্যিকার অর্থে যা চায়, তা যেন দেশটির শাসক করতে বাধ্য হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্ন্যাপ ব্যাক নামের নিষেধাজ্ঞা ৪ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এ নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য থাকবে ইরানের গাড়ি খাত এবং স্বর্ণসহ অন্যান্য ধাতব বস্তুর বাজার। ৬ নভেম্বর দ্বিতীয় আরেকটি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। এ নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু হবে ইরানের জ্বালানি খাত। বিশেষ করে তেলবিষয়ক লেনদেন ও ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লেনদেন। ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে ট্রাম্প সরিয়ে নেওয়ার দুই মাসের মাথায় এ পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে।
ব্রায়ান হুক জানান, ইউরোপীয় মিত্র ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে এ সপ্তাহের শেষদিকে ইরান ইস্যুতে আলোচনা করবেন। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সামনের দিনগুলোতে আরব উপসাগরীয় দেশগুলো সফর করবেন।