শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইরানের ওপর ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ‘এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, যা আগে কখনও করা হয়নি। এ নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর হলে ইরানকে তাদের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের এমন ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। খবর বিবিসি।
ইরান তাদের পারমাণবিক উচ্চাকাক্সক্ষা পরিত্যাগ করা, ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করা এবং মধ্যপ্রাচে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা বন্ধ করাসহ যুক্তরাষ্ট্রের সব দাবি মেনে না নিলে এ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়বে বলে গত সোমবার জানিয়েছেন পম্পেও। গত ৮ মে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরে আসায় দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ঘোষণার পর পম্পেও এ কড়া হুমকি শোনালেন।
পরমাণু কর্মসূচি থেকে কেন ট্রাম্প বেরিয়ে এলেনÑএ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বলেন, ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি যে চুক্তি হয়েছিল ওই চুক্তিতে মৌলিক ত্রুটি ছিল। সে জন্য তিনি ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছেন।
তিনি আরও বলেন, ইরানের সঙ্গে ওবামা প্রশাসনের চুক্তিতে পূর্ণাঙ্গ কিছু ছিল না। সেটি আংশিক বিষয় ছিল বলে তারা মনে করেন। তিনি মনে করেন, সে চুক্তি কাজ করেনি। সে কারণে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দিকেই এগিয়েছে। ইরানকে দেওয়া বেশকিছু শর্ত মানা না হলে কঠিন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর পম্পেও তার প্রথম বৈদেশিক নীতিবিষয়ক ভাষণে ইরানকে ওই হুমকি দেন। তিনি আরও বলেন, ইরানের শাসকরা দেশের জনগণ এবং নিজেদের জন্য যে অগ্রহণযোগ্য এবং নিষ্ফল পথ বেছে নিয়েছে তা থেকে সরে আসলে গাদা গাদা নিষেধাজ্ঞা কেবল তাদের জন্য আরও যন্ত্রণাদায়কই হবে।
পম্পেও বলেন, এ নিষেধাজ্ঞাগুলো হবে ইতিহাসে আমাদের আরোপ করা এ যাবৎকালের সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর হলে ইরানকে তাদের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি। তিনি বলেন, ২০১৫ সালের পরমাণু কর্মসূচি কিভাবে মধ্যপ্রাচ্যকে নিরাপদ রাখতে পারে তা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন পম্পেও।
পরমাণুু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে আসলেও বর্তমানে ইউরোপ ইরানের সঙ্গে আগের চুক্তি বহাল রাখার পক্ষে রয়েছে। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের মিত্রদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
ইউরোপের অনেক প্রতিষ্ঠান ইরানে বিনিয়োগ করেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কারণে ইউরোপ দুই ধরনের সমস্যায় পড়েছে। একদিকে তাদের ইরানে বিনিয়োগ বাঁচাতে হবে। অন্যদিকে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষতি স্বীকার করে হলেও ইরান থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে শুরু করেছে। রাশিয়া, চীন এবং ভারত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কাছে স্বীকার করবে কি না, তাও দেখার বিষয়।
ইরানে সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
