Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 2:22 am

ইলিশ না থাকায় অন্য মাছের দাম বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজারে সব ধরনের সবজির উপস্থিতি রয়েছে। মৌসুম না হলেও শীতকালীন সবজি বাজারে এসেছে অনেক আগেই। প্রতিদিন বাজারে প্রবেশ করছে হরেক রকমের সবজি তবুও দাম কমছে না। সরবরাহ বাড়লেও নানা অজুহাতে সবজির দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে ইলিশ না থাকায় দাম বেড়েছে অন্য মাছের।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। বিক্রেতারা বলছেন, এখন সবজির দাম কম হওয়ার কথা থাকলেও বন্যার কারণে দাম কমছে না। পাইকারি বাজারে বাড়তি দাম হওয়ায় খুচরাতেও বাড়তি রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে।
রাজধানীর রামপুরা, খিলগাঁও, খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি টমেটো মানভেদে ১০০ থেকে ১২০, গাজর ৭০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও একই দামে বিক্রি হয়েছে। একইভাবে আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে অন্য সব সবজি। প্রতি কেজি পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০, ঝিঙা ৪০ থেকে ৬০, করলা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০, বেগুন ৫০ থেকে ৮০, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০, শসা (হাইব্রিড) ৪০ টাকা, শসা (দেশি) ৪৫ থেকে ৬০, কচুর ছড়া ৫০ থেকে ৬০, কচুর লতা ৪০ থেকে ৭০, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, শিম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমলেও ২০ টাকা বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। এসব বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি করতে দেখা গেছে ১২০ টাকা কেজি দরে। আর কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে।
এছাড়া আকারভেদে প্রতি পিস বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৪০, ফুলকপি ৩০ থেকে ৫০, লাউ ৪০ থেকে ৬০, জালি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। সবজির মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের শাক। প্রতি আঁটি (মোড়া) লালশাক ১০ থেকে ১৫, মুলাশাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, পালং শাক ২০, কুমড়া শাক ২৫ থেকে ৩০, লাউশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং পুঁইশাক ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সবজির বাড়তি দাম নিয়ে বিক্রেতারা বন্যাকে দায়ী করছেন। তাদের অভিযোগ বন্যার কারণে অনেক এলাকায় সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে আগে থেকে সবজির সরবরাহ বেড়েছে।
মজিবুর রহমান নামে কারওয়ান বাজারের এক খুচরা সবজি বিক্রেতা জানান, দেশের মধ্যে অনেক এলাকায় বন্যা হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে পণ্য কম আসছে। এতে পাইকার বাজারে দাম বেড়ে যায়। আর এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়ে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ঊর্ধ্বমুখী মাছের বাজার। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় অন্য সব মাছে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর মাছের দর বৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর রামপুরা, খিলগাঁও, খিলগাঁও রেলগেট বাজার, কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায় এসব বাজারে প্রতি কেজি (আকারভেদে) রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, মৃগেল ২২০ থেকে ৩০০, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৮০, পাঙাশ ১৪০ থেকে ১৬০, কৈ ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
এক সপ্তাহ আগে এসব বাজারে প্রতি কেজি (আকারভেদে) রুই বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ৩৫০, মৃগেল ১৮০ থেকে ২৫০, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৬০, পাঙাশ ১০০ থেকে ১০০, কই ১৭০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে।
এছাড়া ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতি কেজি বাগদা চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৭৫০, গলদা ৪৫০ থেকে ৮৫০, শিং ৪০০ থেকে ৮৫০, দেশি মাগুর ৫০০ থেকে ৯৫০, বাইন (নদী) ৫০০ থেকে ৯৫০, বেলে ৪৫০ থেকে ৭৫০, কাচকি ৩০০ থেকে ৪৫০, মলা ৩০০ থেকে ৪০০, পুঁটি (দেশি) ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে প্রচুর ইলিশের চাহিদা রয়েছে, যেহেতু ইলিশ নেই তাই ক্রেতারা অন্য মাছের (সাদা মাছ) প্রতি ঝুঁকছেন। তবে সাদা মাছের সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম থাকায় মাছের দাম বাড়তি রয়েছে।
কারওয়ান বাজারের খুচরা মাছ বিক্রেতা জিয়াউল আলম জানান, বাজারে ইলিশের ব্যাপক চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ ছিল পর্যাপ্ত। এখন ইলিশ না থাকায় সাদা মাছের প্রতি সবাই ঝুঁকছেন। তবে সরবরাহ কম থাকায় এসব মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে।