শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার ২৪ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছে। খবর: আল জাজিরা।
দাইর আল-বালাহ এলাকার একটি ভবনে ইযরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। ওই ভবনে গাজার নানা জায়গা থেকে আসা উদ্বাস্তুরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৬০৬ জনে।
জাতিসংঘের শরণার্থী-বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, তারা উত্তর গাজায় আর সহায়তা পাঠাতে পারছে না। ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার কারণ সেখানে ‘সামাজিক কাঠামো’ ভেঙে পড়েছে বলে দাবি সংস্থাটির।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, গাজার উত্তরাঞ্চলে খাবারের জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বাসিন্দারা। অনেকে পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য বিক্ষোভ করছে।
জাবালিয়া এলাকার বাসিন্দা আহমেদ আতেল শাফি বলেন, এখানে আমাদের চালের জন্য মারামারি করতে হচ্ছে। আমরা কোথায় যাব? একই এলাকার আরেক বাসিন্দা ওউম ওয়াজদি সালহা বলেন, আমাদের খাবার পানি নেই, ময়দা নেই; ক্ষুধায় আমরা ক্লান্ত। আগুন ও ধোঁয়ার কারণে আমাদের চোখ জ্বলছে, পিঠে ব্যথা।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইযরায়েলি হামলায় ২৯ হাজার ৬০৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৬৯ হাজার ৭৩৭ জন। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে নিহতের সংখ্যা ৯২ জনে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে বারবার ভেটো দেয়ায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনা করেছে ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ)। সংগঠনের মহাসচিব ক্রিস্তোফার লকইয়ার বলেন, গাজার মানুষদের দরকার একটি যুদ্ধবিরতিÑযখন সম্ভব তখন নয়, এখনই। তাদের একটি টেকসই যুদ্ধবিরতি দরকার, অস্থায়ী শান্ত সময় নয়। এর মধ্যে কোনোটি কম হলে তা হবে চরম অবহেলা।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে আশু যুদ্ধবিরতির জন্য নিরাপত্তা পরিষদের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্র বারবার ভেটো দেয়ায় তিনি আতঙ্কিত বোধ করছেন বলে জানান লকইয়ার। তিনি জানান, গাজা ভূখণ্ডে চিকিৎসক দলগুলো নতুন একটি নাম পেয়েছে। সেটি হলোÑডব্লিউসিএনএসএফ (উন্ডেড চিলড্রেন, নো সারভাইভিং ফ্যামিলি)Ñএটি পরিবারহীন আহত শিশু বোঝাতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকে লকইয়ার বলেন, এই যুদ্ধে বেঁচে থাকা শিশুরা তীব্র যন্ত্রণাদায়ক আঘাতের দৃশ্যমান জখমই শুধু বহন করছে না, তারা অদৃশ্য আঘাতও বহন করছে। বারবার বাস্তুচ্যুতি, ক্রমাগত আতঙ্ক ও আক্ষরিক অর্থে চোখের সামনে পরিবারের সদস্যদের অঙ্গচ্ছেদ দেখতে হচ্ছে তাদের।