Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 11:22 pm

ইসরায়েলের কারণে ক্ষুধায় মরছে গাজার মানুষ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় এখন ইসরায়েলের ছোড়া গুলি ও বোমার চেয়ে দেশটির ইচ্ছাকৃতভাবে চাপিয়ে দেয়া ক্ষুধায় বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। এই মন্তব্য করেছেন, খাদ্য অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত মাইকেল ফখরি। খবর: আল জাজিরা।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত আরও বলেন, গাজায় দুর্ভিক্ষজনিত ক্ষতির রেশ টানতে হবে ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ কয়েক প্রজš§কে। ইসরায়েল গাজার খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিষক্রিয়ায় কৃষিজমি অনাবাদি করে ফেলা এবং খেতখামার, বন্দর ও মাছধরা নৌযানগুলো ধ্বংস করা। এতে গাজার পুরো জনগোষ্ঠী মানবিক ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

গাজাবাসীর এই নির্ভরশীলতা পুঁজি করে তাদের ক্ষতি করতে ও মেরে ফেলতে রাজনৈতিক এবং সামরিক অস্ত্র হিসেবে মানবিক ত্রাণ ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে মানবিক ত্রাণ প্রবেশে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করার বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
গাজার ক্ষুধা পরিস্থিতি নিয়ে গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক নতুন প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন মাইকেল ফখরি। এরপর তিনি ওই মন্তব্য করলেন। গাজার জনগোষ্ঠী বা এর অংশবিশেষকে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে ইসরায়েল কীভাবে ক্ষুধাকে ব্যবহার করছে, সে বিষয়ে ওই প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন বিশেষ দূত।
মাইকেল ফখরি বলেন, যুদ্ধপরবর্তী ইতিহাসে কখনও কোনো জনগোষ্ঠীকে এত দ্রুত ক্ষুধার সম্মুখীন ও তীব্র ক্ষুধায় পতিত হতে দেখা যায়নি; যেমনটা ঘটেছে গাজায় বসবাসরত ২৩ লাখ মানুষের ক্ষেত্রে। গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করার পর এ উপত্যকায় ৩৪ ফিলিস্তিনি না খেয়ে মারা গেছেন বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে। তাদের বেশির ভাগ শিশু।

সামাজি যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে ফখরি বলেন, গাজাবাসীকে ক্ষুধায় মেরে ফেলার ইসরায়েলি কৌশলের শুরু ৭ অক্টোবরের অনেক আগে থেকেই। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, গাজায় খাদ্য প্রবেশে দেশটি বাধা দেয়া শুরু করে সেই ১৯৯১ সালে আর ২০০০ সাল থেকে উপত্যকাটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে তারা। এ অপতৎপরতা এখন শুধু গাজায় সীমাবদ্ধ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশেষ দূত আরও বলেন, গত ৭০ বছরের বেশি সময় ধরেই ফিলিস্তিনিদের খাদ্যব্যবস্থা ধ্বংস করে আসছে ইসরায়েল। এ সময়ের মধ্যে দেশটি তাদের বাগান ও খামার ধ্বংস করেছে। এছাড়া হয়রানি বা হত্যা করেছে কৃষক, জেলে ও মেষপালকদের। নিজ বাড়িঘর ও এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাত করার লক্ষ্যে ইসরায়েলি চেষ্টার অংশ ফিলিস্তিনিদের ক্ষুধায় রাখার এ কৌশল।