ইসিকে আস্থা অর্জনের আহ্বান জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যথাযথ পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সবার আস্থা অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে ২০টি পরামর্শ দিয়েছেন তারা। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন সংস্কার, সীমানা পুনর্নির্ধারণসহ ঘোষিত রোডম্যাপ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নির্ধারিত সংলাপে তারা এসব পরামর্শ দেন।

নির্বাচন কমিশনের আহ্বানে গতকাল বুধবার নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময়ে অংশ নেন ২৬ গণমাধ্যম প্রতিনিধি। গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের প্রথম ধাপে প্রিন্ট মিডিয়া ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মিলিয়ে ৩৭ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাদের মধ্যে নূরুল কবীর, সাইফুল আলম, আশিস সৈকত, মোস্তফা কামাল, মতিউর রহমান চৌধুরী, খন্দকার মুনীরুজ্জামান, শ্যামল দত্ত, নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, আনিস আলমগীর, মো. শফিকুর রহমান, ফরিদা ইয়াসমিন, সামশুল হক, মনজুরুল আহসান বুলবুল, ওমর ফারুক, মো. আব্দুল্লাহ, মাহফুজউল্লাহ, কাজী সিরাজ, আনিসুল হক, আমানুল্লাহ কবীর, গোলাম মর্তুজা, বিভুরঞ্জন সরকার, মাহবুব কামাল, সোহরাব হাসান, কাজী রোকনুদ্দীন আহমদ প্রমুখ অংশ নেন।

এছাড়া আজ বৃহস্পতিবারের সংলাপের দ্বিতীয় পর্বে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও এজেন্সির প্রধান সম্পাদক এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া, রেডিওর বার্তা প্রধানসহ ৩৪ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান জানান, জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা সমর্থন করেন না তিনি। সেইসঙ্গে নামসর্বস্ব পর্যবেক্ষক সংস্থাকে যেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ না দেওয়া হয়। তবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিরপেক্ষ ভূমিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, নির্বাচন একটা রাজনৈতিক উৎসব। সব দলের অংশগ্রহণ যেন নিশ্চিত করা যায় সে ব্যবস্থা নিতে হবে। দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে হবে।

সাংবাদিক নঈম নিজাম জানান, সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির বিষয়ে আমরা মতামত দিয়েছি। বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে কমিশনকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংখ্যালঘু ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নজর দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী কোনো দল যাতে নিবন্ধন না পায় সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। জামায়াত যাতে অন্য কোনো নামে বা অন্য কোনো ফরম্যাটে ভোট করতে না পারে, সে বিষয়ে আইনি উদ্যোগ নিতে হবে।

বৈঠকশেষে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সংলাপে পাওয়া সুপারিশগুলো তুলে ধরেন সাংবাদিকদের কাছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন, বিদ্যমান আইনের সঠিক প্রয়োগ, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বাংলায় প্রকাশ, জনসংখ্যার ভিত্তিতে সীমানা পুনর্নির্ধারণ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আচরণবিধি প্রয়োগে কঠোর হওয়া, প্রবাসীদের ভোটার হওয়া ও ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা, নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ, নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার রোধ, অবৈধ অর্থ ও পেশিশক্তির ব্যবহার রোধ, প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশ ও প্রচারের উদ্যোগ, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও কাউকে যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ফিরে আসতে না হয় সে ব্যবস্থা করা, দৃঢ়তার সঙ্গে ইসির দায়িত্ব পালন, অনলাইনে মনোনয়ন নেওয়ার সুযোগ প্রদান, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, ভোটার ও প্রার্থীর আস্থা তৈরি এবং নারী ভোটারের উপস্থিতি ও নারী নেতৃত্বের অগ্রগতি ধরে রাখতে ভূমিকা নেওয়ার পরামর্শ গুরুত্ব পেয়েছে। তবে সেনা মোতায়েন এবং না-ভোটের বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত এসেছে সিনিয়র সাংবাদিকদের কাছ থেকে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০