নিজস্ব প্রতিবেদক : সাহসের সঙ্গে কঠিন ও কঠোরভাবে নির্বাচন পরিচালনার পরামর্শ দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধরা। একই সঙ্গে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘না’ ভোটের বিধান রাখা ও সেনা মোতায়েনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। গতকাল সোমবার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে একথা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।
এ সময় তিনি বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা থেকে উঠে আসা পরামর্শের ভিত্তিতে প্রয়োজনে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, আমাদের ধারাবাহিক আলোচনা হবে। সবার বক্তব্য শুনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন করবো। সেখান থেকে যেসব বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করা প্রয়োজন, সেগুলো আমরা সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় চিন্তা করবো।
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে সিইসি বলেন, তাদের আমরা আশ্বস্ত করেছি আইনের আলোকে নির্বাচন পরিচালনার যে ক্ষমতা ইসির সাংবিধানিকভাবে রয়েছে, তা পরিপূর্ণভাবে করা হবে।
সিইসি জানান, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সবচেয়ে বেশি পরামর্শ দিয়েছেন কমিশনকে ‘সাহসিকতার’ সঙ্গে কাজ করার জন্য। তাগিদ দিয়েছেন জনগণের আস্থা অর্জনের। ইতোমধ্যে আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে সংলাপ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত কমিশনের সব কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে করা হয়েছে। বলা যায় আস্থা অর্জনের কাজগুলো কমিশন করে যাচ্ছে।
সিইসি বলেন, ইসি একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। সেখানে সরকারের কারা থাকবে বা কারা থাকবে না সেটার চেয়েও বড় কথা হলোÑকঠোরভাবে, কঠিনভাবে এ নির্বাচন পরিচালনা আমাদের করতে হবে। জাতি আমাদের কাছে প্রত্যাশা করে সুষ্ঠু, ভালো নির্বাচন। আমরা যেন করতে পারি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা তা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
সংলাপের মাধ্যমে সরকার ও রাজনৈতিক দলের ওপর প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সিইসি। তবে সংলাপের সুপারিশ নিয়ে সরকার চাপে থাকবে কি না, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি। রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে অনেকে বলেছেন, এসব ইসির এখতিয়ারভুক্ত নয়। সরকার গঠন করা বা কেয়ারটেকার গঠনে কোনটা ইসির এখতিয়ারে রয়েছে, কোনটা নেইÑউনারা বিজ্ঞ ব্যক্তি, তারা জানেনও। তবে সবার কথা প্রতিবেদন আকারে সরকারের কাছে পাঠাবো, এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠাবো।
সিইসি জানান, সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচনকালীন সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে যেমন অনেকে দাবি তুলেছেন, তেমনি সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিলে পুলিশ, বিজিবি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যদের ক্ষমতা খর্ব হবে বলেও মত দিয়েছেন। অনেকে না ভোট চালুসহ নানা ধরনের সুপারিশ তুলে ধরেছেন বলেও জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
Add Comment