নাজমুল ইসলাম ফারুক: আবাসন ব্যবসায় মন্দার কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ণ হাউজিং লিমিটেডের আয়ে কিছুটা ভাটা পড়েছে। তবে আয় কমলেও কোম্পানির প্রশাসনিক ব্যয় বেড়েছে। ফলে কোম্পানিটির মুনাফা ও শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে। সর্বশেষ প্রকাশিত কোম্পানির আর্থিক বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে।
কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে কোম্পানির আয় হয়েছে ৬২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগের বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৭১ কোটি চার লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে আয় কমেছে প্রায় ১১ কোটি টাকা।
আয় কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ইস্টার্ণ হাউজিংয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আবাসনের খাতের ব্যবসা চলতি বছরের তিন মাসে কিছুটা মন্দা ছিল। এতে কোম্পানির আয়ে প্রভাব পড়েছে।
কোম্পানি সচিব সেলিম আহমেদ বলেন, সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকে আয় কিছুটা কমলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে চলতি হিসাববছরের মোট ৯ মাসে আয়ের পাশাপাশি ইপিএস বেড়েছে।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির মুনাফা দাঁড়িয়েছে ছয় কোটি পাঁচ লাখ টাকা ও ইপিএস হয়েছে ৬৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফার পরিমাণ ছিল আট কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং ইপিএস ৯১ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে মুনাফা কমেছে দুই কোটি ৪৬ লাখ ৯১ হাজার টাকা এবং ইপিএস কমেছে ২৬ পয়সা।
অন্যদিকে আয় কমলেও আলোচ্য সময়ে কোম্পানির প্রশাসনিক ব্যয় বেড়েছে। গত ৯ মাসে কোম্পানিটির প্রশাসনিক ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের বছর একই সময়ে ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে গত ৯ মাসে প্রশাসনিক ব্যয় বেড়েছে এক কোটি ৭১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
কোম্পানির শেয়ারদর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ ৪৭ টাকা ৬০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ার সর্বনি¤œ ৩২ টাকা ৭০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা ৪০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে।
লভ্যাংশ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কোম্পানিটি গত সমাপ্ত বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে নগদ লভ্যাংশ রয়েছে ১৫ শতাংশ। কোম্পানির দেওয়া লভ্যাংশের প্রকৃত মুনাফার হার (ইল্ড) ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ, যা আগের দুই বছর একই পরিমাণ লভ্যাংশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
পুঁজিবাজারে ১৯৯৪ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৯৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৩৩ লাখ ৪৫ হাজার ১৫৩টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৫০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৬ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।